স্পোর্টস ডেস্ক:
দ্বিতীয় স্তরের ঘরোয়া ফুটবল বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়নশিপ লিগে একের পর এক লাঞ্ছনার শিকার হচ্ছেন রেফারিরা। গতকাল সিটি ক্লাব ও বাফুফে এলিট একাডেমির মধ্যকার ম্যাচের দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হামলার শিকার হয়ে মাটিতে লুটে পড়েন রেফারি জিএম চৌধুরী নয়ন। ১৮ বছরের ক্যারিয়ারে এমনটা কখনোই দেখতে হয়নি তাঁকে। তাঁর অভিযোগ সিটি ক্লাবের দিকেই।
ফর্টিসের জলসিঁড়ি মাঠে অনুষ্ঠিত ম্যাচটি ড্র হয় ১-১ ব্যবধানে। ম্যাচটি জিতলে টেবিলের দুইয়ে থাকা আরামবাগ ক্রীড়া সংঘের সঙ্গে ব্যবধান কমাতো সিটি ক্লাব। কারণ সেরা দুইয়ে থেকে লিগ শেষ করলে যোগ্যতা অর্জন করবে প্রিমিয়ার লিগে খেলার। কিন্তু শেষ মুহূর্তে বাফুফে এলিট একাডেমির পক্ষে একটি পেনাল্টির সিদ্ধান্ত জল ঢালে তাদের আশায়।
হামলার শিকার হওয়া নয়ন আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘দ্বিতীয়ার্ধে একটি গোল করে এগিয়ে যাওয়ার পর সময় নষ্ট করতে থাকে সিটি ক্লাব। যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে বক্সের ভেতর বাফুফে এলিট একাডেমির এক ফুটবলারকে ট্যাকল করার চেষ্টা করছিল সিটি ক্লাবের এক ফুটবলার। না পেরে তাকে কুস্তি খেলার মতো হাত দিয়ে ধরে ফেলে দিল সে। তাই এর বিপরীতে আমি পেনাল্টি ও হলুদ কার্ড দেখালাম। কিন্তু শেষ বাঁশি বাজানোর পর দেখি হঠাৎ করে সিটি ক্লাবের সমর্থক, খেলোয়াড় ও কর্মকর্তা আমার ওপর হামলা করল। আমি মাথায় ও কোমরে অনেক আঘাত পেয়েছি। ১৮ বছরের ক্যারিয়ারে আমি কখনো এমন হামলার শিকার হইনি। আমি কল্পনাও করতে পারছি না।’
এমন ঘটনা ঘটতে থাকলে রেফারিংয়ে কেউ আগ্রহ দেখাবেন না বলে মত নয়নের। তিনি বলেন, ‘আরামবাগ হারছে জানার পর সময় নষ্ট করার জন্য তারা যা ইচ্ছা তাই করছে। তারা পেনাল্টি নিয়ে অসন্তুষ্ট ছিল। এর আগেও কয়েকজন রেফারির ওপর হামলা হয়েছে। এমনটা হতে থাকলে কেউ রেফারিংয়ে আসতে চাইবে না।’
সিটি ক্লাবের কোচ মাহবুব আলী মানিক অবশ্য পাল্টা অভিযোগ করেন রেফারির দিকেই। তিনি বলেন, ‘রেফারি শুরু থেকেই আমাদের বিরুদ্ধে বাজে সিদ্ধান্ত দিচ্ছিল। খেলার শেষ মুহূর্তে অন্যায়ভাবে পেনাল্টি দেওয়া হয়। পেনাল্টি শেষে সেন্টার করার পরপরই শেষ বাঁশি বাজান তিনি। এরপর সমর্থকেরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁর ওপর হামলা করতে থাকে। যদিও এটা করা উচিত হয়নি। তবে আমাদের খেলোয়াড়দের কারণ দর্শানো নোটিশ দেওয়া হয়েছে। অথচ তারা রেফারিকে বাঁচাতে গিয়েছিল।’
এই ঘটনায় সিটি ক্লাবের তিন ফুটবলার গোলরক্ষক কোচ, বলবয় ও এক সমর্থককে কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছে বাফুফে। শৃঙ্খলা কমিটির সিদ্ধান্তের আগপর্যন্ত খেলায় নিষিদ্ধ থাকবেন তাঁরা। ক্লাবটির ম্যানেজার আমির হোসেন বাবুল বলেন, ‘এর আগে কয়েক ম্যাচে বাজে সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে আমাদের বিপক্ষে। আমাদের খেলোয়াড়েরা রেফারিকে রক্ষা করতেই সেখানে গিয়েছিল, মারতে নয়।’
গত ৩০ এপ্রিল ফর্টিসের মাঠেই পিডব্লিউডি ও ওয়ারী ক্লাবের মধ্যকার ম্যাচে ওয়ারীর কয়েকজন কর্মকর্তা রেফারির ওপর চড়াও হন। আরেক ম্যাচে ফরাশগঞ্জ-পিডব্লিউডি ম্যাচে রেফারিকে আক্রমণ করে ফরাশগঞ্জ।
ডেস্ক: আর
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।