আন্তর্জাতিক ডেস্ক
আকাশসীমা লঙ্ঘন করে ইসরায়েলি হামলার জেরে কাতারের প্রতি সমর্থন জানিয়ে একজোট হয়েছে আরব ও ইসলামিক বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে সোমবার দোহায় অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আরব-ইসলামিক বিশ্বের নেতাদের শীর্ষ সম্মেলন।
গত সপ্তাহে দোহায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র সংগঠন হামাসের নেতাদের লক্ষ্য করে ইসরায়েল যে হামলা চালায়, সেই ঘটনার প্রতিবাদে এই জরুরি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। হামাস দাবি করেছে, ওই হামলায় তাদের পাঁচজন সদস্য নিহত হয়েছেন, তবে শীর্ষ নেতারা অক্ষত রয়েছেন।
এই হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র উপসাগরীয় আরব দেশগুলো ঐক্যবদ্ধ হওয়ার চেষ্টা করছে, যার ফলে সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) ও ইসরায়েলের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন আরও তীব্র হয়েছে। উল্লেখ্য, ২০২০ সালে ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্বাভাবিক করেছিল আমিরাত।
সম্মেলনে অংশ নিচ্ছে আরব লীগ এবং ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) সদস্য রাষ্ট্রগুলো। রোববার এসব দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের খসড়া প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে।
আরব লীগের মহাসচিব আহমেদ আবুল ঘেইত বলেছেন, “এই সম্মেলনের বার্তা হলো কাতার একা নয়… আরব ও ইসলামি দেশগুলো তার পাশে রয়েছে।”
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ৯ সেপ্টেম্বরের হামলার পরও কাতারের ওপর চাপ অব্যাহত রেখেছেন। বুধবার দোহাকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, কাতারকে হামাস নেতাদের বহিষ্কার করতে হবে অথবা বিচারের আওতায় আনতে হবে। তিনি আরও বলেন, কাতার যদি তা না করে, তাহলে “আমরা করব”।
গাজা যুদ্ধ বন্ধে কাতার গুরুত্বপূর্ণ মধ্যস্থতাকারী ভূমিকা পালন করে আসছে প্রায় দুই বছর ধরে। দেশটি অভিযোগ করছে, ইসরায়েল শান্তি প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করছে এবং নেতানিয়াহু রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ চালাচ্ছেন। দোহায় ইসরায়েলি হামলায় কাতারের নিরাপত্তা বাহিনীর একজন সদস্যও নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েলি হামলার বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, “এ ধরনের হামলা ইসরায়েল বা যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্যকে এগিয়ে নেয় না।” কাতারকে “ঘনিষ্ঠ মিত্র” আখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, দেশটি শান্তি প্রতিষ্ঠায় “কঠোর পরিশ্রম” করছে।
তবে হামাসকে নির্মূল করাকে তিনি সঠিক লক্ষ্য বলে উল্লেখ করেছেন। হামলার পর কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানিকে ট্রাম্প বলেন, কাতারের মাটিতে যেন এমন ঘটনা আর না ঘটে।
নেতানিয়াহু বলেন, কাতারে অবস্থানরত হামাস নেতাদের নির্মূল করা গেলে গাজায় বন্দি জিম্মিদের মুক্তি এবং চলমান যুদ্ধের প্রধান বাধা দূর হবে।
স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানায়, গাজায় ইসরায়েলের অভিযানে এখন পর্যন্ত ৬৪ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। অন্যদিকে, ইসরায়েলি হিসাবে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ১ হাজার ২০০ জন নিহত হন এবং ২৫১ জনকে গাজায় জিম্মি করা হয়। বর্তমানে হামাসের হাতে ৪৮ জন জিম্মি রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বয় করে কাতার বন্দি মুক্তি এবং যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে।
সূত্র: রয়টার্স
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।