ভারতের রাজধানী দিল্লিতে সিএএবিরোধীদের ওপর হিন্দুত্ববাদীদের তাণ্ডব নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ট্যাটাস দিয়ে গ্রেফতার হয়েছেন আসমের বাঙালি অধ্যাপক সৌরদীপ সেনগুপ্ত।
ওই স্ট্যাটাসে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে একরকম ধুয়ে দেন তিনি।
তিনি লিখেছিলেন, ‘আমরা এক গণহত্যাকারীকে দুইবার নির্বাচিত করেছি।’
পরদিনই গ্রেফতার হন সৌরদীপ।
সৌরদীপের এই গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন গুরুচরণ কলেজের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। তার পক্ষে অনেকেই স্ট্যাটাস দিলে সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড় হয়।
এই গ্রেফতারের নিন্দা জানানো হয়েছে আসাদের কংগ্রেস ও সিপিএম পার্টি থেকেও ।
সিপিএস নেতা ও পলিট ব্যুরোর সদস্য মুহাম্মাদ সেলিম এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, ‘ভারতে এখন আর গণতন্ত্র নেই। মোদির বিরুদ্ধে কোনা কথা বললেই গ্রেফতার হতে হয়। বিজেপি রেসিয়াল ডেমোক্রেসির চর্চা শুরু করেছে।’
কংগ্রেসের সংসদ সদস্য প্রদীপ ভট্টাচার্য অধ্যাপক গ্রেফতারের ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন।
শনিবার আসামের শিক্ষাবিদ অমল মুখোপাধ্যায় বলেছেন, ‘ এ ঘটনায় আমি স্তম্ভিত, হতাশ। ওই অধ্যাপক কোনো অপরাধ করেননি। ফেসবুকে দিল্লির ঘটনা নিয়ে মন্তব্য করা তার অধিকার। ভারতের সংবিধানের ১৯ ধারা অনুযায়ী আমাদের বাকস্বাধীনতা রয়েছে। এটা যে কেউ করতে পারে।
তিনি বলেন, ভারতে এখন বাকস্বাধীনতা প্রয়োগ করলেই হামলা হচ্ছে, গ্রেফতার করা হচ্ছে। এমনটা চলতে থাকলে ভারতকে সভ্যদেশ বলা যাবে না। এটা খুব দুর্ভাগ্যজনক।’
তবে এসব তীব্র নিন্দা আর সোশ্যাল মিডিয়ায় অধ্যাপক সৌরদীপের গ্রেফতারের প্রতিবাদের ঝড়ে কুপকাত করতে পারেনি রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষকে।
তিনি গ্রেফতারের ঘটনাকে সমর্থন করে অধ্যাপকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি জানিয়েছেন।
প্রসঙ্গত দিল্লির সেই সহিংসতার বিষয়ে নরেন্দ্র মোদিকে টার্গেট করে বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন অধ্যাপক সৌরদীপ সেনগুপ্ত নামের ওই। তিনি আসামের গুরুচরণ কলেজে পদার্থ্যবিদ্যা পড়ান।
মোদির বিরুদ্ধে ফেসবুকে স্ট্যাটাসটি দিলে তা ভাইরাল হয়ে পড়ে। পোস্টটি বিজেপিশাসিত আসমে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম কলকাতা নিউজ ও এবিপি আনন্দের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ওই স্ট্যাটাসে দেয়ার কলেজে গিয়ে অধ্যাপক সৌরদীপ হিন্দুত্ববাদী এবিভিপি ও বিজেপি দলের সদস্যদের সহিংস আচরণের মুখে পড়েন।
চাপের মুখে পড়ে নিজের সেই স্ট্যাটাস মুছে দিয়ে ক্ষমা চাইলেও তার ওপর সন্তুষ্ট হয়নি আসামের ‘গেরুয়া শিবিরের সদস্যরা।
রাতেই তার বাড়ি গিয়ে চড়াও হয়ে হুমকি দেন ও ফেসবুক লাইভে ক্ষমা চাইতে বল প্রয়োগ করে। এর পরই ঘটনাস্থলে পুলিশ এসে সৌরদীপকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়।
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।