কন্যাসন্তান সৌভাগ্যের প্রতীক – BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, বিকাল ৩:৩৩, ১২ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ


 

কন্যাসন্তান সৌভাগ্যের প্রতীক

newsup
প্রকাশিত অক্টোবর ১০, ২০২১
কন্যাসন্তান সৌভাগ্যের প্রতীক

Manual3 Ad Code

ইসলামিক ডেস্কঃ 

Manual1 Ad Code

সন্তান মহান আল্লাহ তায়ালার শ্রেষ্ঠ নেয়ামতগুলোর একটি। সন্তান পৃথিবীতে আসার ক্ষেত্রে মা-বাবা হচ্ছেন একটি বাহ্যিক মাধ্যম। কিন্তু সন্তান তৈরিতে মা-বাবার কোনো ক্ষমতা নেই। সন্তান একমাত্র প্রজ্ঞাময় মহাজ্ঞানী আল্লাহ তায়ালার দান। তার কুদরতের এক অপূর্ব নিদর্শন। তিনি যাকে ইচ্ছা তাকে সন্তান দান করেন। কাউকে পুত্র দেন। কাউকে দেন কন্যা। আবার কেউ সন্তানহীনতার দুঃসহ জ্বালা নিয়ে জীবননদী পাড়ি দিতে বাধ্য হন। এটি আল্লাহ তায়ালার সৃষ্টির এক নিগূঢ় রহস্যাবৃত বিষয়। পবিত্র কোরআনুল কারিমে ইরশাদ হয়েছে—‘নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের রাজত্ব আল্লাহ তাআলারই। তিনি যা ইচ্ছা, সৃষ্টি করেন, যাকে ইচ্ছা কন্যাসন্তান এবং যাকে ইচ্ছা পুত্রসন্তান দান করেন। অথবা তাদেরকে দান করেন পুত্র ও কন্যা উভয়ই এবং যাকে ইচ্ছা বন্ধ্যা করে দেন। নিশ্চয় তিনি সর্বজ্ঞ, ক্ষমতাশীল।’ (সুরা শুরা ৪৯ :৪৯-৫০)

আয়াতে কারিমার বার্তা সুস্পষ্ট। সন্তান একমাত্র আল্লাহ তায়ালার দান। এখানে সৃষ্টির কোনো হাত নেই। যাকে চান তাকেই তিন পুত্র কিংবা কন্যাসন্তানের নেয়ামত দান করেন। পুত্র-কন্যা দুটোই মূল্যবান নেয়ামত। তবে বিভিন্ন আয়াত, হাদিস ও সালাফের উক্তির আলোকে বোঝা যায় যে, কন্যাসন্তান সৌভাগ্যের প্রতীক। মেয়েরা মা বাবার জীবনে কল্যাণের বার্তা নিয়ে আসে। দেখুন, আয়াতে আল্লাহ তায়ালা প্রথমে কন্যাসন্তানের কথা উল্লেখ করেছেন। তাই কোনো কোনো আলেমের ভাষ্য হচ্ছে—কন্যাসন্তানের বিশেষ মর্যাদার দিকে ইঙ্গিত রয়েছে আয়াতটিতে।

muslim-baby

বিখ্যাত মুফাসসির লেখক ও গবেষক আল্লামা আবু আব্দুল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনে আহমদ আল কুরতুবি (রহ) (মৃত্যু:৬৭১ হি.) তার তাফসির গ্রন্থে উল্লেখ করেন, হজরত ওয়াসিলা ইবনে আসকা (রহ) বলেন, ‘যে নারীর গর্ভে প্রথম কন্যাসন্তান জন্ম নেবে সে নারী পুণ্যময়ী’। কন্যাসন্তানের জন্ম গ্রহনে আনন্দিত হওয়া পবিত্র কোরআনুল কারিমের শিক্ষা। কন্যাসন্তান জন্ম নিলে যারা খুশি হয় না, লজ্জাবোধ করে কোরআনে তাদের নিন্দা করা হয়েছে। প্রাক-ইসলামিক যুগে আরবে লোকেরা কন্যাসন্তানকে অশুভ মনে করত। কারো কন্যাসন্তান জন্ম নিলে লজ্জায় তার চেহারা মলিন হয়ে যেত। অনেকে বর্বরতার সীমা অতিক্রম করে কন্যাসন্তানকে জীবন্ত দাফন করার মতো লোমহর্ষক হিংস্রতায় মেতে উঠত। পবিত্র কোরআন মাজিদে এহেন নিচু বর্বর আচরণের তীব্র নিন্দা জানিয়ে এরশাদ হয়েছে, ‘যখন তাদের কাউকে কন্যাসন্তানের সুসংবাদ দেওয়া হয়, তখন তাদের মুখ কাল হয়ে যায় এবং অসহ্য মনস্তাপে ক্লিষ্ট হতে থাকে। তাকে শোনানো সুসংবাদের দুঃখে সে লোকদের কাছ থেকে মুখ লুকিয়ে থাকে। সে ভাবে, অপমান সহ্য করে তাকে থাকতে দেবে, না তাকে মাটির নিচে পুঁতে ফেলবে। শুনে রাখো, তাদের ফয়সালা খুবই নিকৃষ্ট।’ (সুরা নাহল ১৬ :৫৮-৫৯)

Manual7 Ad Code

Manual8 Ad Code

বর্তমান যুগে সরাসরি কন্যাসন্তানকে জীবন্ত দাফন করার বিষয়টি শোনা না গেলেও তথাকথিত সভ্যতার ধ্বজাধারীরা জাহেলি যুগের বর্বরতাকেও হার মানাচ্ছে। মায়ের গর্ভে কন্যাসন্তানের ভ্রূণকে অঙ্করেই শেষ করে দিচ্ছে। পবিত্র কোরআন মাজিদে এই ভয়াবহ হিংস তার পথ রুদ্ধ করতে ইরশাদ হয়েছে—‘দারিদ্র্যের ভয়ে তোমাদের সন্তানদেরকে হত্যা করো না। তাদেরকে এবং তোমাদেরকে আমিই জীবনোপকরণ (রিজক) দিয়ে থাকি। নিশ্চয় তাদেরকে হত্যা করা মারাত্মক অপরাধ।’ (সুরা বনি ইসরাঈল :৩১) রসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, অসহায় ও দুর্বলদের উসিলায় তোমাদের রিজক দেওয়া হয়।

হজরত আনাস (রা) থেকে বর্ণিত, নবি করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এরশাদ করেছেন, ‘যার দুটি কন্যা বা বোন আছে আর সে উত্তমভাবে তাদের ভরণ-পোষণ করল এবং উপযুক্ত হওয়ার পর ভালো পাত্রের কাছে বিবাহের ব্যবস্থা করল, আমি ও সে জান্নাতে এভাবে প্রবেশ করব, যেভাবে এ দুটি আঙুল মিলে আছে। এ কথা বলে তিনি ডান হাতের শাহাদত ও মধ্যমা আঙুলদ্বয় মিলিয়ে দেখালেন।’ (সহিহ ইবনে হিব্বান: ২০৪৩) ।

কন্যাসন্তান হলে দিতে হবে না হাসপাতালের বিল | 382831 | কালের কণ্ঠ |  kalerkantho

Manual4 Ad Code

কোরআন সুন্নাহর এই দীপ্তিময় নির্দেশনাগুলোর আলোকে এ কথা সূর্যালোকের ন্যায় প্রতীয়মান হয় যে, কন্যাসন্তান কোনো বোঝা নয়। নয় অশুভ লজ্জার কারণ। বরং তারা সৌভাগ্যের প্রতীক। বরকত আনয়নকারী। কন্যাসন্তান চিরসুখের সুনির্মল ঠিকানা জান্নাতের বার্তাবাহী।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।
Manual1 Ad Code
Manual3 Ad Code