ফেনীতে পাঁচশ টাকার টোকেনে চলে ৯০ শতাংশ অবৈধ সিএনজি অটোরিকশা - BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, রাত ১২:৪৪, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ


 

ফেনীতে পাঁচশ টাকার টোকেনে চলে ৯০ শতাংশ অবৈধ সিএনজি অটোরিকশা

ADMIN, USA
প্রকাশিত অক্টোবর ২৫, ২০২১
ফেনীতে পাঁচশ টাকার টোকেনে চলে ৯০ শতাংশ অবৈধ সিএনজি অটোরিকশা
ফেনী থেকে মফিজূর রহমান
ফেনী জেলার বিভিন্ন সড়কে মাসে ৫০০ টাকার টোকেন-স্টিকার দিয়ে চলছে সহস্রাধিক অবৈধ সিএনজি অটোরিকশা। এসব অটোরিকশার নেই কোনো নম্বরপ্লেট, রুট পারমিট কিংবা কোনো বৈধ কাগজপত্র।
এর মধ্যে ৯০ শতাংশ চালকের নেই ড্রাইভিং লাইসেন্স। চালকরা একটি টোকেন বা স্টিকার দিয়ে সড়ক ব্যবহার করছেন। এতে প্রতিমাসে বিপুল পরিমান রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
এদিকে পুলিশকে দেওয়ার কথা বলে একটি শ্রমিক সংগঠন প্রতি মাসে এসব টোকেনপ্রতি আদায় করছে ৫০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত। শ্রমিকরা জানান, এই টোকেন সঙ্গে থাকলে তাদের পুলিশ আটকায় না।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যয়, ফেনী জেলার বিভিন্ন সড়কে চলাচলকারী ২৪ হাজার অটোরিকশার ৯০ভাগেরই নিবন্ধন কিংবা কোনো বৈধ কাগজপত্র নেই। বিআরটিএ সূত্রমতে, জেলায় নিবন্ধনকৃত সিএনজির সংখ্যা মোট ৯ হাজার ২০০টি। এর মধ্যে ৬ হাজার সিএনজির নিবন্ধন নবায়ন করা হয়নি। আর নিবন্ধিত চালক ১ হাজার ২৫৫ জন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সিএনজিচালক বলেন, ‘নবায়ন বা নতুন লাইসেন্স বানাতে ১০-১৫ হাজার টাকা খরচ হয়। তার ওপর নানা হয়রানি। অথচ মাসিক ৫০০ টাকা হারে বছরে ৬ হাজার টাকার স্টিকার দিয়ে টেনশন ছাড়া চলছি।’
নম্বরবিহীন কয়েকটি সিএনজি অটোরিকশা চালকের সঙ্গে কথা বললে তারা গাড়ির সামনের গ্লাসে লাগানো স্টিকার বা টোকেন দেখান। অনেক চালক তাদের হাতে চাবির রিং দেখিয়ে বলেন, এটা দিয়ে পুরো নোয়াখালী অঞ্চল বিনা বাঁধায় চলাচল করা যায়। টোকেন ও স্টিকারের দাম ৫০০ টাকা এবং রিংয়ের দাম ১ হাজার টাকা বলে জানান এসব চালকরা।
টোকেন দেওয়ার কথা স্বীকার করে ফেনী জেলা অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. হানিফ বলেন, ‘যেসব সিএনজির লাইসেন্স, ফিটনেস ও ড্রাইভারের কাগজপত্র নেই, তারা থানা পুলিশ, প্রশাসন থেকে বাঁচতে কিছু টাকা দিয়ে স্টিকার নিয়ে যায়।’
টাকা আদায়ের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সংগঠনের পেছনে কিছু ব্যয় আছে, কেউ মারা গেলে বা দুর্ঘটনার শিকার শ্রমিকদের সমিতি থেকে সাহায্য-সহযোগিতা করা হয়।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, নিবন্ধন, ট্যাক্স-টোকেন ও ফিটনেসবিহীন অবৈধ রুট পারমিটের বিরুদ্ধে বিআরটিএ এবং ট্রাফিক পুলিশ মাঝে মধ্যে অভিযান চালায়। তবে অভিযানের খবর আগেই পেয়ে যান অবৈধ অটোরিকশাচালকরা।
ফেনী জেলা বিআরটিএ’র যানবাহন পরিদর্শক জমির হোসেন বলেন, ফেনীতে সরকার কর্তৃক নিধারিত সিএনজির কোটা পূর্ণ থাকায় গত ২ বছর নতুন করে নিবন্ধন দিচ্ছে না সরকার।
ফেনী জেলা বিআরটিএর নির্বাহী প্রকৌশলী পার্কন চৌধুরী বিআরটিএর বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘সিএনজির মালিকরা নিজেদের সুবিধার জন্য অবৈধভাবে টাকা দিয়ে রাস্তায় চালাচ্ছে। তবে আমরা প্রতি মাসেই অভিযান চালিয়ে অবৈধ সিএনজি আটক ও আদায় করছি।
টাকার বিনিময়ে স্টিকার প্রদানের বিষয়টি অস্বীকার করে ফেনী জেলা ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক আহম্মদ নুর বলেন, ‘যাদের লাইসেন্স পাওয়া যায় না, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের ট্রাফিক পুলিশের পক্ষ থেকে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ অব্যাহত আছে।’
ফেনী জেলা প্রশাসক আবু সেলিম মাহমুদ উল হাসান বলেন, ‘জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। খুব শিগগির আমরা নিবন্ধনের বিষয়ে একটা সিদ্ধান্ত নেব।’
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।