স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায়

Daily Ajker Sylhet

newsup

১৩ এপ্রি ২০২৫, ০৫:১৯ পূর্বাহ্ণ


স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায়

বাসস

রাজধানীর কদমতলী থানাধীন খালপাড় এলাকায় যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীর গায়ের ওপর গরম সয়াবিন তেল ঢেলে হত্যার অভিযোগে করা মামলায় স্বামী মো. মিজান সরদারকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল। মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি তাকে এক লাখ টাকা অর্থদণ্ডের আদেশ দেন আদালত।

আজ ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান এ রায় ঘোষণা করেন। এদিন রায় ঘোষণার আগে আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর সাজা পরোয়ানা দিয়ে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। দণ্ডপ্রাপ্ত মিজান পিরোজপুর জেলার নাজিরপুর থানার বাবুরহাট গ্রামের মৃত আওয়াল সরদারের ছেলে।

মামলা সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী মীম আক্তার রুপার সাথে ঘটনার প্রায় দশ বছর আগে মো. মিজান সরদারের সাথে বিয়ে হয়। এই দম্পতির দুটি সন্তান ছিল। ভিকটিম তার স্বামীর কাছ থেকে যৌতুকের দাবিতে বিভিন্ন সময় নির্যাতনের শিকার হন। এর আগে আসামি মিজান তার শ্বশুরের কাছ থেকে বিশ লাখ টাকা মূল্যের একটি জমি এবং সাত লাখ টাকা মূল্যের একটি দোকান যৌতুক হিসেবে আদায় করে নেন।

২০২৩ সালের ৬ মে রাত ১০ টার দিকে আসামি মিজান সরদার স্ত্রী রুপার কাছে আবার অতিরিক্ত যৌতুকের টাকা দাবি করলে, সে তা দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এ কারণে মিজান তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। পরবর্তীতে, সেই রাতে প্রায় ৩ টার দিকে, যখন ভুক্তভোগী এবং তার সন্তানরা ঘরে ঘুমাচ্ছিল, তখন মিজান সরদার একটি ফ্রাইং প্যানে গরম সয়াবিন তেল তৈরি করে স্ত্রীর গায়ে ঢেলে দেয়। এতে গুরুতর দগ্ধ হয়ে ভিকটিম ব্যথায় চিৎকার করতে করতে বাথরুমে ছুটে যায়। তার চিৎকার শুনে বিল্ডিংয়ের কেয়ারটেকার এগিয়ে এসে ভুক্তভোগী ও তার সন্তানদের উদ্ধার করে এবং তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নিয়ে যায়। যেখানে তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় আইসিইউতে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনায় ভিকটিম রুপার বাবা জাহাঙ্গীর আলম বাদী হয়ে ৯ মে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে ২৫ মে রুপা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। মৃত্যুর আগে, ভুক্তভোগী ১৪ মে ঢাকার জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শেখ মুজাহিদুল ইসলামের কাছে মৃত্যুকালীন জবানবন্দী দেন। একই আদালতে আসামি মিজান সরদার দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দেন।

তদন্ত শেষে পুলিশের উপ-পরিদর্শক সরোজিৎ কুমার ঘোষ একই বছরের ৩১ জুলাই আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এরপর তার বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়। মামলার বিচার চলাকালে আদালত ১২ জন সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করেন।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।