হিন্দু মুসলিম নির্যাতন নতুন করে উত্তপ্ত ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক
১৯ এপ্রি ২০২৫, ১২:০৮ অপরাহ্ণ

ভারতী গ্ণমাধ্যম থেকে ডেস্ক রিপোর্ট
বাংলাদেশে হিন্দু নেতাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা, কড়া নিন্দা ভারতের ।
মুর্শিদাবাদে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হিংসার ঘটনার সমালোচনা করেছে বাংলাদেশ সরকার ৷ এর পরদিনই বাংলাদেশে এক হিন্দু নেতার অপহরণ ও হত্যার ঘটনা সামনে এল ৷
মুর্শিদাবাদে সাম্প্রদায়িক হিংসার সমালোচনা করেছিলেন ইউনূস প্রশাসনের তরফে প্রেসসচিব শফিকুল আলম ৷ এর পরদিনই বাংলাদেশে ফের সংখ্যালঘু হিন্দু নেতা খুনের খবর প্রকাশ্যে এল ! হিন্দু সম্প্রদায়ের এক নেতাকে তাঁর বাড়ি থেকে অপহরণ করে খুনের অভিযোগ উঠল দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে ৷ শুক্রবার খবরটি প্রকাশিত হয়েছে দেশেরই সংবাদমাধ্যমে ৷ এই পরিস্থিতিতে শনিবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী ইউনূস প্রশাসনের কড়া সমালোচনা করল মোদি সরকার ৷ দাবি ভারতীয় গণমাধ্যম ইটিভির।
বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এক্স হ্যান্ডেলে একটি বিবৃতিতে ইউনূস প্রশাসনকে হিন্দু-সহ দেশের অন্যান্য় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের অধিকার রক্ষার দায়িত্ব ফের মনে করিয়ে দিয়েছেন ৷ কংগ্রেসও বাংলাদেশে হিন্দু নেতার হত্যার ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছে ৷ ভারতের প্রাচীন দলটি এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে ঢাকার সঙ্গে কথা বলার দাবি জানিয়েছে ৷
ইটিভির দাবি করেছে শুক্রবার বাংলাদেশের সংবাদপত্র ‘দ্য ডেইলি স্টার’-এ নিহত হিন্দু নেতার পরিবার ও পুলিশের বক্তব্য প্রকাশিত হয় ৷ সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার রাতে হিন্দু নেতা ভবেশ চন্দ্র রায়ের (58) দেহ উদ্ধার হয় ৷ তিনি বাংলাদেশের উত্তরে দিনাজপুরের বাসুদেবপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন ৷ ঢাকা থেকে দিনাজপুরের দূরত্ব প্রায় 330 কিলোমিটার ৷
নিহত ভবেশ রায়ের স্ত্রী সান্ত্বনা রায় ‘দ্য ডেইলি স্টার’ সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, বিকেল ৪টা ৩০ মিনিট নাগাদ তাঁর স্বামীর কাছে একটি ফোন আসে ৷ স্ত্রীর দাবি, ভবেশ রায় বাড়িতে আছেন কি না, তা নিশ্চিত করতেই ফোনটি করেছিল দুষ্কৃতীরা ৷ বাংলাদেশের পূজা উদযাপন পরিষদের ‘বিরল’ ইউনিটের সহ-সভাপতি ছিলেন ভবেশ রায় ৷ এলাকায় হিন্দু নেতা হিসাবে তাঁর যথেষ্ট খ্যাতি ছিল বলে জানা গিয়েছে ৷
সংবাদপত্রে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, এই ফোন আসার আধ ঘণ্টা পর বাইকে চড়ে চারজন আসে এবং বাড়ির এলাকা থেকে ভবেশকে অপহরণ করে ৷ তাঁকে নরবাড়ি গ্রামে নিয়ে গিয়ে নৃশংস অত্যাচার করা হয় ৷ স্বভাবতই এমন অত্যাচারে ভবেশ রায় জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন ৷ সংজ্ঞাবিহীন অবস্থায় তাঁকে বাড়িতে ফিরিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা ৷ পরিবারের সদস্যরা তাঁকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যান ৷ সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন ৷
বিরল থানার পুলিশ আধিকারিকের উদ্ধৃতি তুলে ‘দ্য ডেইলি স্টার’ জানিয়েছে, এই ঘটনায় একটি মামলা দায়ের করা হবে ৷ এই হত্যায় জড়িত দুষ্কৃতীদের সন্ধান চালাচ্ছে পুলিশ ৷ তাদের গ্রেফতার করা হবে ৷
ভারতের নিন্দা
এদিন রণধীর জয়সওয়াল লেখেন, “বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু নেতা শ্রীভবেশচন্দ্র রায়ের অপহরণ এবং তাঁকে নৃশংসভাবে খুনের ঘটনার কথা আমরা জেনেছি ৷ বর্তমান অন্তর্বর্তী প্রশাসনের আমলে এর আগেও সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে ৷ সেই রীতি মেনে এই হত্যার ঘটনাটিও ঘটল ৷ এর আগে হত্যার ঘটনাগুলিতে জড়িত অপরাধীরা উন্মুক্ত ঘুরে বেড়াচ্ছে ৷ আমরা এই ঘটনার এর তীব্র নিন্দা করছি ৷ কোনও অজুহাত বা ভেদাভেদ না করে আরও একবার অন্তর্বর্তী প্রশাসনকে দেশের হিন্দু-সহ সংখ্য়ালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তার দায়িত্ব মনে করিয়ে দিচ্ছি ৷”
সম্প্রতি মুর্শিদাবাদে ওয়াকফ আইনের বিরুদ্ধে হিংসার ঘটনায় বাংলাদেশের দুষ্কৃতীদের হাত রয়েছে বলে দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ এছাড়াও একাধিক সূত্রে এই এক দাবি করা হয় ৷ এরপর বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রেসসচিব শফিকুল আলম মুর্শিদাবাদে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর হামলার ঘটনার সমালোচনা করে ৷ এর সঙ্গে ভারত ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে এই বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ করার আর্জি জানায় ৷ বিদেশ মন্ত্রক তড়িঘড়ি বাংলাদেশকে পাল্টা জবাবে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা রক্ষার দিকে মনোযোগ দিতে উপদেশ দেয় ৷ এনিয়ে নতুন করে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক ৷ ডেস্ক জেবি