ড্রামাটিক টাইব্রেকারে ইউরো চ্যাম্পিয়ন ইতালি - BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, দুপুর ১২:৩৫, ১৮ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ


 

ড্রামাটিক টাইব্রেকারে ইউরো চ্যাম্পিয়ন ইতালি

banglanewsus.com
প্রকাশিত জুলাই ১১, ২০২১
ড্রামাটিক টাইব্রেকারে ইউরো চ্যাম্পিয়ন ইতালি

স্পোর্টস ডেস্কঃ

শ্বাসরুদ্ধকর এক ড্রামাটিক টাইব্রেকারেই গড়াল এবারের ইউরোর ফাইনাল। যেখানে পেনাল্টি শুট-আউটে ইংল্যান্ডকে ৩-২ গোলে হারিয়ে ইউরো ২০২০ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ইতালি। গ্যালারী ভরা দর্শক নিয়ে কাঁদল ইংল্যান্ড, ৫৩ বছর পর আবারও ইউরোর শিরোপা পেয়ে হাসল আজ্জুরিরা।

বলতে গেলে জীবন কখনো বেজায় নিষ্ঠুর। ঝলমলে মঞ্চ সাজিয়ে, সব রং এক করে কখনো এক মুহূর্তে সব মলিন হয়ে যেতে পারে। সব পাওয়ার আশা জাগিয়ে না পাওয়ার বেদনায় দ্বিগুন সমারোহে পোড়াতে পারে। ইংল্যান্ডের দিকেই তাকিয়ে দেখুন, তেমনই মনে হবে।

প্রেক্ষাপট ধরে এগোই। লন্ডনের ওয়েম্বলিতে বাঁধভাঙা মানুষের জোয়ার। ফুটবল তার জনকের কাছে ফিরেছে সোনালী স্বপ্ন মুঠোয় নিয়ে। ৫৫ বছরের দীর্ঘ অপেক্ষা শেষে একটা ফাইনালে পৌঁছেছে ইংলিশরা, তাও আবার হিসাব কষে একেবারে ঘরের মাঠে! সমর্থকদের কি ঘরে আটকে রাখা যায়? কোথাকার করোনা মহামারী কিংবা স্বাস্থ্যবিধির বালাই, রাষ্ট্রের চোখরাঙানি কিংবা রাস্তায় পুলিশি বাধা, সব ভেঙে ওয়েম্বলিতে ঢুকতে চায় অগণিত দর্শক। ৬০ হাজারেরও বেশি দর্শক ধারণক্ষমতার গ্যালারিতে ঠাঁই নেই কোথাও!

এসবের মাঝেও আলাদা করে নজর কাড়েন কেউ কেউ। ওয়েম্বলিতে যেন তারার হাট বসেছে! প্রিন্স হ্যারি, কেট মিডলটন হয়ে সেলুলয়েডের ক্রেইজ টম ক্রুজ অথবা ডেভিড বেকহ্যাম। ক্যামেরার চোখ তাদেরকে খুঁজে নেয় বারবার। তবে আজকের তারকা ওরা নয়। ওদের কেউই নয়। তারা যাদেরকে দেখতে এসেছেন তারাই হবেন বাস্তবের পর্দার হিরো। হ্যারিকেইন, স্টার্লিং কিংবা হ্যারি ম্যাগুইয়ার, পাদপ্রদীপের সব আলো তাদের ঘিরে।

 

 

ওদিকে ইতালিয়ানদের গর্জন শোনা যায়। ইউরোর সমৃদ্ধ ইতিহাস কিংবা এবারের আসরে দৃপ্ত পদচারণা ওদেরকে সাহস যোগায়। কিয়েলিনি, বোনুচ্চি, ইনসিনিয়েরা চওড়া বুকে মাঠে নামেন। তবে ওয়েম্বলির উচ্ছ্বাস কানফাটা গর্জনে রূপ নিতে সময় লাগে মাত্র ২ মিনিট। ইতালিয়ানদের জমাট রক্ষণদুর্গ ভাঙতে মাত্র ২ মিনিট সময় নেন লুক শ। শুরুতেই লিড নিয়ে নেয় গ্যারেথ সাউথগেট বাহিনী। এই এক গোল শোধ করতে মরিয়া হয়ে নামে রবার্তো মানচিনির ইতালি। একের পর এক আক্রমনে অতিষ্ঠ ইংলিশ রক্ষণ। ৬৭ মিনিটে বুড়ো বুনোচ্চি গোলটা শোধ করেন।

১-১ সমতায় ম্যাচ পার করে ৯০ মিনিট। তারপর আরো ৩০ মিনিট। যুদ্ধটা চলে। কারো আক্রমনের, কারো আক্রমন ঠেকানোর। ইতালিয়ানদের আধিপত্যটা পরিষ্কার। ১৯ বার ইংলিশদের জালের খোঁজ করেছে তারা, গোলপোস্টে শট নিয়েছে ৬বার। বিপরীতে স্বাগতিকরা মাত্র ২বার ইতালিয়ানদের গোলপোস্টে শট নিতে পেরেছে। Imageএসব শট কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে গোলকিপারদের দৃঢ়তার কাছে।

 

 

টাইব্রেকারে প্রথম শট নেন ইতালির বেরার্দি। পিকফোর্ডকে বোকা বানাতে খুব একটা সমস্যা হয়নি তার। বাঁ-প্রান্ত দিয়ে গড়ানো শটে এগিয়ে যায় আজ্জুরিরা। ইংলিশরা দায়িত্বটা তুলে দেন হ্যারি কেইনকে। একই জায়গা দিয়ে সমতায় ফেরে স্বাগতিকরা।

ইতালির দ্বিতীয় শট নেন বেলোত্তি। এবার আর পিকফোর্ড হতাশ করেননি ওয়েম্বলিকে। ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পরে আটকে দেন বেলোত্তির শট। ইতালি ভুল করলেও, ভুল করেন নি ম্যাগুয়ের। দুরন্ত শটে এগিয়ে দেন দলকে।

তৃতীয় শট নেন ইতালির বোনুচ্চি। ঠিক দিকে ঝাঁপ দিলেও আটকাতে পারেননি পিকফোর্ড। কিন্তু, দলের এগিয়ে থাকা সহ্য হয়নি মার্কাস রাশফোর্ডের। অবাক করা শটে পোষ্টে লাগান এই ফরোয়ার্ড।

চতুর্থ শটে ইতালিয়ানদের আবারো এগিয়ে দেন বার্নার্ডোস্কি। আর রাশফোর্ডের পর ইংল্যান্ডকে হতাশা ডোবায় সানচো। কিন্তু শ্বাসরুদ্ধকর ম্যাচটাকে আরো উত্তপ্ত করে তোলেন জর্জিনহো। পিকফোর্ড আবারো বাঁচিয়ে দেন ইংল্যান্ডকে।

কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর পারেনি ইংল্যান্ড। শাকার শট আটকে দেন দোনারুম্মা।  ফলাফল, অর্ধলক্ষেরও বেশি ইংলিশের সামনে বুনো উল্লাসে মাতলো ইতালিয়ানরা। বিষাদের নীল রং ছাপিয়ে আনন্দের ঢেউ ওঠে ইতালির জার্সি বেয়ে। ওদিকে, হতাশায় মুষড়ে পড়া হাজারো দর্শকের সামনে বাকরুদ্ধ ইংলিশ শিবির। আহা, ৫৫ বছর পর পাওয়া ফাইনালটাও সুখের হলো না! ফুটবল গোয়িং টু রোম।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।