মুহাম্মদ সালেহ আহমদ, লন্ডন :
মুক্তিযুদ্ধের সময়কাল থেকে বাংলাদেশে বহুমুখী দাতব্য সেবা প্রদান করে আসছে ব্রিটিশ আন্তর্জাতিক চ্যারিটি সংগঠন অক্সফাম। মাতৃভূমির মানুষের জীবন-মান রক্ষা ও উন্নয়নে সংস্থাটির চমৎকার কাজগুলোর কথা স্মরণ করতে বাংলাদেশে অক্সফামের ৫০ বছর উদযাপনের উদ্যোগ নিয়েছে ‘ব্রিটিশ বাংলাদেশি ফ্রেন্ডস অফ অক্সফাম’।
এ উপলক্ষ্যে আগামী ৫ অক্টোবর, ২০২২ পূর্ব লন্ডনের রয়্যাল রিজেন্সি হলে একটি চ্যারিটি ডিনারের আয়োজন করা হয়েছে। এতে বাংলাদেশে মানবসেবায় অক্সফামের অবদান উদযাপনের পাশাপাশি সংস্থাটির মানবিক জরুরি প্রকল্পের জন্য তহবিলও সংগ্রহ করা হবে।
১৮ আগস্ট বৃহস্পতিবার লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাব কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত ‘মিট দ্য মিডিয়া’ অনুষ্ঠানে এ আয়োজনের কথা জানানো হয়।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ‘আমরা যখন বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তি উদযাপন করছি; তখন এই স্বাধীন বাংলাদেশে অক্সফামের মত আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থার চমৎকার মানবিক কাজগুলোর দিকে ফিরে তাকানো এবং এর সাফল্য উদযাপনও জরুরি।’
স্থানীয় নিউহাম কাউন্সিলের কাউন্সিলার মমতাজ খানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত ‘মিট দ্য মিডিয়া’ অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন অক্সফামের পেট্রন আজিজ রহমান ও সাংবাদিক উদয় শঙ্কর দাশ ।
এতে বাংলা লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মাহির আহমদ এবং ইংরেজি লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন রাজিয়া লতিফ।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বাংলাদেশে অক্সফামের ৫০ বছর উদযাপন অনুষ্ঠানে ‘কী নোট স্পিকার’ হিসেবে থাকবেন জুলিয়ান এইচ ফ্রান্সিস, ওবিই।
যিনি ছিলেন ১৯৭১ সালে অক্সফামের শরণার্থী ত্রাণ কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়কারী।
বাংলাদেশ সরকারের দেয়া ‘ফ্রেন্ডস অফ লিবারেশন ওয়ার’ সম্মাননাপ্রাপ্ত মিস্টার ফ্রান্সিস এখন বাংলাদেশের একজন পূর্ণ নাগরিক।
ওই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন যুক্তরাজ্য ও আয়ারল্যান্ডে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দা মুনা তাসনিম।
এছাড়া অক্সফামের কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন কর্মকর্তাসহ আরও অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। চ্যারিটি ডিনার থেকে সংগৃহিত তহবিল সাম্প্রতিক ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত সিলেটসহ বিভিন্ন এলাকার জনগোষ্ঠীর কল্যাণে ব্যয় করা হবে বলে জানানো হয়।
স্থানীয় বিভিন্ন সংস্থার সাথে অংশিদারিত্বের ভিত্তিতে অক্সফাম এ অর্থ কাজে লাগাবে। চ্যারিটি ডিনারে ১০ জন ব্যক্তির একটি টেবিলের টিকিটের মূল্য ধরা হয়েছে ৫শ পাউন্ড।
এই আয়োজনকে সফল ও সার্থ্যক করার জন্য কমিউনিটির সর্বস্তরের মানুষের ইতিবাচক সাড়া এবং সমর্থনের প্রত্যাশা করছে ‘ব্রিটিশ বাংলাদেশি ফ্রেন্ডস অফ অক্সফাম’।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আন্তর্জাতিক চ্যারিটি সংগঠন অক্সফাম বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য বিমোচনে অবহেলিত, বঞ্চিত ও দুর্যোগপীড়িত মানুষের সঙ্গে যে কাজ করে যাচ্ছে তার সরাসরি উপকারভোগী আমরা বাংলাদেশিরা।
১৯৭০ সালে ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছাসের শিকার মানুষের পাশে দাঁড়ানোর মধ্যদিয়ে বাংলাদেশে অক্সফামের কার্যক্রম শুরু হয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পরিপ্রেক্ষিতে বাস্তুচ্যুত লাখ লাখ লোকের খাদ্য, আশ্রয় ও চিকিৎসা সামগ্রী প্রদানে অক্সফাম অভাবনীয় ভূমিকা পালন করে। স্বাধীনতার পর শরণার্থীদের পুনর্বাসনের পাশাপাশি নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং সদ্য স্বাধীন দেশের দারিদ্র বিমোচনেও অক্সফামের ভূমিকা অনন্য।