সম্পাদকীয়: দেশের ৪৭ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকদের বড় একটি অংশ ছুটিতে থাকার বিষয়টি অগ্রহণযোগ্য। এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট শিক্ষক রয়েছেন ১৫ হাজার ৫ জন। তাদের মধ্যে ৩ হাজার ৫২৮ জন অন্তত ৫ ধরনের ছুটিতে রয়েছেন, যা মোট শিক্ষকের ২৩ শতাংশেরও বেশি। এছাড়া এসব উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে খণ্ডকালীন চাকরির প্রবণতাও রয়েছে।
এছাড়া কারও কারও বিরুদ্ধে এনজিও ব্যবসা, বিদেশি সংস্থায় পরামর্শকসহ বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে খণ্ডকালীন কাজ করার অভিযোগও রয়েছে। উদ্বেগজনক হলো, এ পরিস্থিতির সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিদ্যমান শিক্ষক সংকট; বিশেষ করে ঢাকার বাইরে অপেক্ষাকৃত নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনিয়র শিক্ষকের বেশি অভাব রয়েছে। এক্ষেত্রে বিজ্ঞপ্তি দিয়েও অনেক বিশ্ববিদ্যালয় অধ্যাপক ও সহযোগী অধ্যাপক পাচ্ছে না; আবার কোথাও অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের জেরে নিয়োগ করা হচ্ছে না শিক্ষক।
এ অবস্থায় জুনিয়র শিক্ষক কিংবা ‘যা আছে তা দিয়ে’ই চলছে সেখানকার লেখাপড়া। বস্তুত ছুটি, পদশূন্যতা ও প্রতিষ্ঠানের বাইরে বিভিন্ন কাজে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জড়িয়ে পড়ায় ছাত্রছাত্রীরা গুণগত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন; উপরন্তু গবেষণা কার্যক্রমও বিঘ্নিত হচ্ছে, যা মোটেই কাম্য নয়।
জ্ঞান সৃষ্টি ও নতুন জগতের সঙ্গে পরিচিত হতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের উচ্চতর শিক্ষা কিংবা দেশ-বিদেশে সেমিনার, সম্মেলন বা গবেষণা প্রবন্ধ পাঠ করতে যাওয়া অপরিহার্য এবং এজন্য তারা ছুটিতে যেতেই পারেন। তবে পিএইচডির মতো দীর্ঘ ছুটিতে কেউ গেলে এর বিপরীতে শিক্ষক নিয়োগের বিধানও রয়েছে। সুতরাং এ ধরনের ছুটি একাডেমিক কার্যক্রমে তেমন প্রভাব ফেলার কথা নয়।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।