অনলাইন ডেস্ক:
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে সরকার পতন ও বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতাকে ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’ হিসেবে বর্ণনা করে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, প্রতিবেশী দেশ ‘একে অপরের উপর নির্ভরশীল’ এই মূলনীতিতে বিশ্বাস করে তাঁর দেশ। তাই বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে সুসম্পর্ক তাঁরা ধরে রাখতে চান।
তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকারের ১০০ দিন পূর্তি উপলক্ষে ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভিকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে এই বাংলাদেশ প্রসঙ্গে এই প্রতিক্রিয়া তুলে ধরেন জয়শঙ্কর। বিস্তৃত সাক্ষাৎকারে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধ, তাতে দিল্লির সম্ভাব্য শান্তিরক্ষকের ভূমিকা, ইরানের নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির মন্তব্য, গাজা যুদ্ধ, বিদেশ সফর নিয়ে বিস্তৃত আলোচনা হয়।
বাংলাদেশের চলমান সংকট ও অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে এর প্রভাব নিয়ে প্রশ্নের জবাবে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘সেখানে যা ঘটে তা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। বাংলাদেশ আমাদের প্রতিবেশী, এবং আমাদের পক্ষ থেকে সম্পর্ক স্থিতিশীল রাখতে চাই। আমাদের মধ্যে ভালো বাণিজ্য সম্পর্ক আছে, আমাদের জনগণের মধ্যেও সুসম্পর্ক আছে। আমরা সেভাবেই রাখতে চাই।’
সরকারি চাকরিতে কোটাবিরোধী ছাত্রআন্দোলনের নেতৃত্বে অভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছেড়ে ভারতে রয়েছেন। ঢাকা থেকে সামরিক বিমানে করে উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদের কাছে বিমান বাহিনী ঘাঁটিতে নামেন তিনি।
রাজনৈতিক আশ্রয়ের জন্য তিনি লন্ডনে যাবেন বলে ধারণা করা হলেও সেখান থেকে সবুজ সঙ্কেত মেলেনি। আপাতত শেখ হাসিনা ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার হেফাজতে রয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে।
গত মাসে লোকসভায় জয়শঙ্কর বলেন, স্বল্প সময়ের নোটিশে হাসিনা ঢাকা থেকে দিল্লিতে আসার অনুমতি চেয়েছিলেন। সর্বদলীয় এক ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, ভারত সরকার শেখ হাসিনাকে পরবর্তী পদক্ষেপের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় দিতে প্রস্তুত। এর মধ্যে তাঁর রাজনীতি থেকে অবসরের সিদ্ধান্তও অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে।
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দায়িত্ব নেওয়া অন্তবর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলবিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস গত সপ্তাহে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, বাংলাদেশও ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চায়। কিন্তু এই সম্পর্ক হবে ‘ন্যায্যতা ও সমতা’র ভিত্তিতে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদির কাছ থেকে অভিনন্দন জানিয়ে তিনি ফোনও পেয়েছেন বলেও ইউনূস জানান।
জাতির উদ্দেশে প্রথম ভাষণে অশীতিপর অর্থনীতির অধ্যাপক বলেন, ‘আমরা চাই, বাংলাদেশকে সম্মানজনক গণতন্ত্র হিসাবে স্বীকৃতি দেবে বিশ্ব।
তবে শেখ হাসিনার প্রতি কঠোর হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, তাঁর প্রত্যর্পণ না চাওয়া পর্যন্ত দুই দেশের সম্পর্কের আপস প্রতিরোধে তাকে অবশ্যই নীরব থাকতে হবে।
তিনি বলেন, ‘যদি ভারত তাকে রাখতে চায়, যতক্ষণ না বাংলাদেশ তাকে ফেরত চায়, শর্ত হবে—তাকে চুপ থাকতে হবে।’
Related
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।