রাশিয়ার ‘দখল’ মানতে হবে ইউক্রেনকে

Daily Ajker Sylhet

newsuk

২৩ এপ্রি ২০২৫, ০২:২৯ অপরাহ্ণ


রাশিয়ার ‘দখল’ মানতে হবে ইউক্রেনকে

ডেস্ক রিপোর্ট : যুক্তরাষ্ট্র আশা করছে, ইউক্রেন বুধবার একটি খসড়া শান্তি চুক্তির বিষয়ে তাদের প্রতিক্রিয়া জানাবে। ওই খসড়ায় ক্রিমিয়াকে রাশিয়ার অংশ হিসেবে স্বীকৃতি এবং ২০২২ সালের পর রাশিয়া অধিগ্রহণ করা প্রায় সব অঞ্চল নিয়ে অনানুষ্ঠানিক রুশ নিয়ন্ত্রণ স্বীকার করার বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। বিষয়টির সাথে সরাসরি জড়িত সূত্রগুলো অ্যাক্সিওসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

গত সপ্তাহে প্যারিসে ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাদের হাতে দেয়া যুক্তরাষ্ট্রের এক পৃষ্ঠার নথিকে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ‘চূড়ান্ত প্রস্তাব’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। হোয়াইট হাউজের দাবি, দুই পক্ষ যদি শিগগিরই চুক্তিতে পৌঁছাতে না পারে, তবে তারা আলোচনার টেবিল থেকে সরে যেতে প্রস্তুত। ট্রাম্পের প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে, ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে বড় ধরনের ছাড় দিতে হবে। তবে এর আগে তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, ক্রিমিয়া ও পূর্ব ইউক্রেনের চারটি অঞ্চলে রাশিয়ার দখল মেনে নেয়া তার পক্ষে সম্ভব নয়।

অন্যদিকে, রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন বর্তমান যুদ্ধরেখা স্থির রেখে একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর প্রস্তাব দিয়েছেন। তবে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত শান্তি কাঠামোর অন্যান্য দিক যেমন, ইউক্রেনের ভূখ-ে ইউরোপীয় শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েনের বিষয়টি পূর্বে প্রত্যাখ্যান করেছেন। ইউক্রেন সরকারের ঘনিষ্ঠ এক সূত্র জানায়, কিয়েভ এ প্রস্তাবকে রাশিয়ার পক্ষ থেকে অত্যন্ত পক্ষপাতদুষ্ট মনে করছে। তিনি বলেন, ‘এ প্রস্তাবে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে রাশিয়া কী কী সুবিধা পাবে। কিন্তু ইউক্রেন কী পাবে, তা অস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।’

ট্রাম্পের প্রস্তাব অনুযায়ী রাশিয়া যা পাবে : যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ‘আইনগত স্বীকৃতি’ এবং ক্রিমিয়ায় রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণকে স্বীকৃতি দেয়া হবে। প্রায় পুরো লুহানস্ক ও দখলকৃত দোনেৎস্ক, খেরসন ও জাপোরিঝিয়া অঞ্চলে রাশিয়ার দখলদারিত্বকে ‘কার্যত স্বীকৃতি’ দেয়া হবে। এছাড়া প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ইউক্রেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হতে পারবে, তবে ন্যাটোতে যোগ দেবে না। এতে আরও বলা হয়েছে, ২০১৪ সাল থেকে রাশিয়ার ওপর আরোপিত নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হবে। পাশাপাশি, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অর্থনৈতিক সহযোগিতা জোরদার করা হবে, বিশেষ করে জ্বালানি ও শিল্প খাতে।

ট্রাম্পের প্রস্তাব অনুযায়ী ইউক্রেন যা পাবে : প্রস্তাব অনুযায়ী ইউক্রেনকে ‘একটি শক্তিশালী নিরাপত্তা নিশ্চয়তা’ দেয়া হবে, যা কয়েকটি ইউরোপীয় দেশ এবং ইউরোপের বাইরের কিছু দেশ নিয়ে গঠিত একটি অস্থায়ী গোষ্ঠীর মাধ্যমে বাস্তবায়িত হবে। তবে নথিতে এই শান্তিরক্ষী মিশনের কার্যপ্রণালি নিয়ে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি এবং এতে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো অংশগ্রহণের কথাও উল্লেখ নেই। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, খারকিভ অঞ্চলের যে ছোট অংশটি রাশিয়া দখল করে রেখেছে, সেটি ইউক্রেনের কাছে ফিরিয়ে দেয়া হবে।

এছাড়া, দিনিপ্র নদী পথে বাধাহীন যাতায়াতের নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে। এটি দক্ষিণ ইউক্রেনের কিছু অংশে ফ্রন্টলাইন বরাবর প্রবাহিত হয়েছে। প্রস্তাবে ইউক্রেন পুনর্গঠনের জন্য ক্ষতিপূরণ ও সহায়তার কথা বলা হয়েছে। তবে কোথা থেকে এই অর্থ আসবে, সে বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। জাপোরিঝিয়া পারমাণবিক শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র (ইউরোপের সবচেয়ে বড়) ইউক্রেনীয় ভূখ-ের অংশ হিসেবে বিবেচিত হবে। তবে এটি পরিচালনা করবে যুক্তরাষ্ট্র। ইউক্রেন ও রাশিয়া উভয় দেশেই বিদ্যুৎ সরবরাহ হবে। নথিতে ইউক্রেন-যুক্তরাষ্ট্র খনিজ চুক্তির উল্লেখ করা হয়েছে, যা বৃহস্পতিবার ট্রাম্প স্বাক্ষর করবেন বলে জানিয়েছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আলোচনা চলছে: ক্রেমলিন : রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ ইউক্রেনের সংঘাত নিয়ে রাশিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে আলোচনাকে কঠিন এবং সময়সাপেক্ষ বলে অভিহিত করেছেন। ‘অনেক কঠোর পরিশ্রম চলছে। আমরা আমেরিকানদের সাথে কথা বলছি। প্রক্রিয়াটি কঠিন এবং সময়সাপেক্ষ। আপনার তাৎক্ষণিক ফলাফল আশা করা উচিত নয়, এই কাজটি প্রকাশ্যে করা যাবে না,’ পেসকভের উদ্ধৃতি অনুসারে ফিন্যান্সিয়াল টাইমস বলেছে।

মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন প্রতিনিধি সংবাদপত্রকে বলেছেন যে তিনি আলোচনার সারমর্ম সম্পর্কে তথ্য দিতে পারবেন না। প্রকাশনাটি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন সিনিয়র ইউক্রেনীয় কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়েও জানিয়েছে যে কিয়েভ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং তার দলের প্রস্তাবিত কিছু বসতি স্থাপনের ধারণা ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করে। তবে, তিনি কোন আমেরিকান নেতার উদ্যোগের কথা বলছেন তা তিনি নির্দিষ্ট করেননি। সূত্র : দ্য

Desk: K

 

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।