স্ট্রোক ও হৃদরোগে মৃত্যুর জন্য দায়ী থ্রম্বোসিস
১৬ অক্টো ২০২১, ০২:৫১ অপরাহ্ণ

স্বাস্থ্য-পুষ্টি ডেস্কঃ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ বলেছেন, থ্রম্বোসিসজনিত রোগসমূহ সম্পর্কে রোগী, রোগীর স্বজন, স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী এবং সর্বস্তরের জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরির ব্যাপারে চিকিৎসা শাস্ত্রের বিভিন্ন বিভাগের সমন্বয়ে বিশেষায়িত ক্লিনিকের মাধ্যমে থ্রম্বোসিসজনিত রোগের চিকিৎসা নিশ্চিত করার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তা করা হবে। গতকাল বুধবার বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা শেষে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
সারা বিশ্বের মতো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্ব থ্রম্বোসিস দিবস উদযাপিত হয়েছে। রক্ত জমাট বাধা বা থ্রম্বোসিসজনিত রোগ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি উদ্দেশ্যেই এ দিবসটি পালন করা হয়ে থাকে। থ্রম্বোসিস বলতে রক্তনালিতে অস্বাভাবিক রক্ত জমাট বাঁধাকে বোঝায়। শরীরে যে কোনো কাটাছেঁড়ার পরে রক্ত জমাট বেঁধে রক্তপড়া বন্ধ হয়। এটি একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। কিন্তু কোনো কারণে যদি অস্বাভাবিকভাবে রক্তনালির ভেতরে রক্ত জমাট বেঁধে যায়, তাহলে রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়।
রক্ত প্রবাহিত না হওয়ার কারণে সেখানে কোষগুলোর মৃত্যু হতে পারে এবং আক্রান্ত অঙ্গের কার্যক্ষমতা পুরোপুরি বা আংশিক নষ্ট হয়ে যেতে পারে। মস্তিস্কের রক্তনালিতে রক্ত জমাট বেঁধে স্ট্রোক হতে পারে। হৃদযন্ত্রের রক্তনালিতে রক্ত জমাট বাঁধার ফলে মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন বা হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। পায়ের রক্তনালিতে রক্ত জমাট বাঁধর ফলে ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস হতে পারে। বিশেষ করে যারা লম্বা সময়ে অসুস্থতা বা অপারেশনের কারণে শয্যাশায়ী থাকেন বা যাদের ক্যানসার বা অন্য কোনো উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ রোগ থাকে তাদের এই রোগ হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।
জমাট বাঁধা রক্তের অংশ রক্তের সঙ্গে পরিবাহিত হয়ে ফুসফুসের রক্তনালিতে আটকে ফুসফুসের রক্ত সঞ্চালনে বাধা সৃষ্টি করে পালমোনারি অ্যাম্বালিজম করতে পারে এবং মৃত্যুও ঘটাতে পারে। বর্তমান বিশ্বে মৃত্যুর বড় কারণ স্ট্রোক ও হৃদরোগের পেছনেও থ্রম্বোসিস দায়ী। থ্রম্বোসিসজনিত রোগের ভয়াবহতা বিবেচনায় এ ব্যাপারে সবার সচেতনতা কাম্য। জীবনযাত্রার পরিবর্তন এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ওষুধের মাধ্যমে থ্রম্বোসিসের ঝুঁকি কমানো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি থ্রম্বোসিসজনিত জরুরি রোগের ক্ষেত্রে দ্রুত জীবন রক্ষাকারী চিকিৎসা নিশ্চিত করার কোনো বিকল্প নেই।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন হেমাটোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. মো. সালাহউদ্দিন শাহ। উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (গবেষণা ও উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. মো. জাহিদ হোসেন, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আতিকুর রহমান, ডেন্টাল অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আলী আসগর মোড়ল, মেডিসিন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ডা. মাসুদা বেগম, পরিচালক (হাসপাতাল) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ডা. নজরুল ইসলাম খান, গ্রন্থাগারিক অধ্যাপক ডা. মো. হারিসুল হক, অতিরিক্ত পরিচালক (হাসপাতাল) ডা. মো. নাজমুল করিম মানিক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।