তাবারক হোসেন আজাদ, লক্ষ্মীপুর:
সারা দেশে চলছে তীব্র শীতের প্রকপ। তার সাথে এই তীব্র শীতে হাঁসের মাংসের সঙ্গে সিদ্ধ রুটি লক্ষ্মীপুর জেলার একটি ব্যতিক্রমী ও ঐতিহ্যবাহী ভোজন বিলাসী আয়োজন করে থাকে। দীর্ঘদিন থেকে চলে আসছে ব্যতিক্রমী এ ঐতিহ্য। তবে বর্তমানে এ রকম আয়োজন চলছে শহরের পাশাপাশি গ্রামগুলোতেও।
আয়োজনের সাথে জড়িতদের মাঝে বেশির ভাগই তরুণ বা যুবক। আয়োজন চলে বয়স্ক বন্ধুদের মাঝেও। এমনকি রাজনৈতিক নেতার তুষ্টিতেও হয় এ রকম আয়োজন। শীত আসলেই এ অঞ্চলে হাসেঁর মাংসের চাহিদা বেড়ে যায়। সে জন্য মাংসের বাজারে এখন হাঁসের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। আর হাঁেসর চাহিদার বেশির ভাগ জোগান আসে চর বেষ্টিত রায়পুর, কমলনগর ও রামগতি উপজেলা থেকে। শনিবার রাতে (২৮ ডিসেম্বর) রায়পুরের হায়দরগঞ্জ বাজারে গিয়ে দেখা যায় প্রতি জোড়া মাঝারি সাইজের হাঁস বিক্রি হচ্ছিল ৬০০-৮০০ টাকায়। যা কয়েক দিন আগেও তা ৫০০-৬০০ টাকায় পাওয়া যেত বলে কয়েকজন যুবক ক্রেতার কাছ থেকে জানা যায় ।
রায়পুর সোনাপুর গ্রামের যুবক দেলোয়ার হোসেন নামের এক অটোচালক জানান, হায়দরগঞ্জে ৫ দিন ব্যাপী মাহফিল থেকে আসার পথে ৫টি হাঁস ক্রয় করি। প্রতি বছর শীতে আমার পরিবারে আয়োজন করা হয়ে থাকে হাঁসপার্টি। হাসের মাংস খেলে শীতে আমাদের শরীর গরম থাকে এবং শরিরের ব্যাথ্যা চলে যায়। হাঁসের মাংসের সঙ্গে থাকে রুটি। শীতের তীব্রতা বৃদ্ধির সাথে সাথে বাড়তে থাকে এ রকম আয়োজন। ফলে শীতে হাসেঁর মাংস খাওয়া এ এলাকার এক অঘোষিত এক রেওয়াজে পরিণত হয়েছে।
রায়পুর উপজেলা পরিষদের তরুন ভাইস চেয়ারম্যান এড. মারুফ বিন জাকারিয়া (৩৫) ও কলেজ শিক্ষার্থী জাহেদ হোসেন (২২) জানান, বিভিন্ন ব্যস্ততার কারণে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও অনেকে বাড়িতে হাঁসের মাংস খেতে পারেন না। ছোট ভাই ও বন্ধুরা প্রতি বছর শীতে এ রকম আয়োজন করে আসছে। হাসঁ খাওয়া আর আনন্দ ভাগাভাগি করা। প্রথম সম্পূর্ণ নিজস্ব বন্ধুবান্ধবরা মিলেই করতাম। এখন চাকুরীজীবি ম্যাচে, কলেজ ম্যাচেও আয়োজন করি। তাদের ভাষায় এ রকম আয়োজনের মাধ্যমে বন্ধুত্ব বৃদ্ধি পায়।
ভোজন রসিকদের চাহিদা মেটাতে অনেকে শীতের আগে আগে হাঁস পালন শুরু করেন। জেলার কমলনগর উপজেলার ভুলুয়া নদের চরে তেমনই একজন হাঁসচাষী কামাল উদ্দিন। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় তিনি এই শীতে প্রায় বারোশ হাঁসের একটি খামার গড়ে তুলেছেন।
৪৫ বছর বয়সের কামাল উদ্দিন এলাকায় ‘পাখি বেপারী কামাল’ নামে তিনি পরিচিত। অন্যকিছু করেন না। কেবল পশুপাখি লালন-পালন আর বাজারজাতকরণই তার জীবিকার একমাত্র মাধ্যম। মৌসুম বুঝে তিনি খামার করেন। ঐতিহ্যবাহী ভোজন বিলাসী এই হাঁসের চাহিদা মেটাতে কামাল উদ্দিনের মতো চাষীরা রাখছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা, এমনটাই মনে করেন এখানকার সাধারণ মানুষ।
লক্ষ্মীপুর সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল গফ্ফার জানান, শীত কাল আসলেই যুবকদের পাশাপাশি বযষ্করাও হাঁস খাওয়ার চাহিদা বেড়ে যায়। যা শরিরের জন্য উপকারী। তবে যাদের এলার্জি রয়েছে তারা সর্বি অংশ বাদ দিয়ে বেশি মসলা দিয়ে রান্না করে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।