‘সরকারের এজেন্ট’ কায়সার কামালকে বহিষ্কার করা উচিত: ব্যারিস্টার খোকন - BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, সন্ধ্যা ৭:৫৮, ৩রা মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ


 

‘সরকারের এজেন্ট’ কায়সার কামালকে বহিষ্কার করা উচিত: ব্যারিস্টার খোকন

newsup
প্রকাশিত এপ্রিল ২২, ২০২৪
‘সরকারের এজেন্ট’ কায়সার কামালকে বহিষ্কার করা উচিত: ব্যারিস্টার খোকন

সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব কায়সার কামাল

নিউজ ডেস্ক: ১৮ বছর বয়স থেকে বিএনপি করছেন উল্লেখ করে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেছেন, বিএনপি করছি, করব। পদ-পদবি কোনো বিষয় নয়। তবে কুলাঙ্গাররা শহিদ জিয়ার বিএনপিতে থাকুক, এটা আমি চাই না।

ব্যারিস্টার কায়সার কামালকে অর্বাচীন বালক হিসেবে উল্লেখ করে খোকন বলেন, তিনি একজন আত্মস্বীকৃত অপরাধী। নৈতিক স্খলনের কারণে আইনজীবী ফোরাম থেকে তার সদস্যপদ থাকা উচিত নয়। সরকারের এই এজেন্টকে দল থেকে বহিষ্কার করা উচিত।

সোমবার দুপুরে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির দক্ষিণ হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

নির্বাচনে জয়ী হয়ে বার সভাপতির দায়িত্ব নেওয়ায় ব্যারিস্টার খোকনকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সিনিয়র সহ-সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এই ফোরামের মহাসচিব পদে রয়েছেন ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। আইনজীবী ফোরাম থেকে অব্যাহতি দেওয়ার প্রেক্ষাপটে তিনি এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।

মাহবুব উদ্দিন খোকন তার বক্তব্যে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব কায়সার কামালকে উদ্দেশ করে বলেন, ফোরামের তো গঠনতন্ত্রই নেই। সে কীভাবে বহিষ্কার করে? তার তো ক্ষমতাই নেই? যতক্ষণ পর্যন্ত গঠনতন্ত্র না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত কাউকে বহিষ্কার করা যাবে না। এটা আইনত কার্যকর নয়। আমি বিএনপি করছি, করব।

তিনি বলেন, তারেক রহমানের নির্দেশে আমরা বার নির্বাচনে অংশ নিই। সেই নির্বাচনে আমরা ১৪টি পদের মধ্যে ১২টিতে জয়ী হতাম। কিন্তু কায়সার কামাল তিনবার সরকারের প্যানেলের পক্ষে কাজ করায় আমরা সভাপতিসহ চারটি পদে জয়ী হয়েছি। নির্বাচনের পর ভোট গণনা থেকে আমাদের এজেন্টদের কেন সরিয়ে নেওয়া হলো। এজেন্টদের সরিয়ে নেওয়ার একমাত্র উদ্দেশ্য আওয়ামী লীগকে ওয়াকওভার দেওয়া। অর্থাৎ বার নির্বাচনে সরকারকে জেতানোর জন্য ষড়যন্ত্র করেছেন কায়সার কামাল। এ ষড়যন্ত্রের মূলে ছিল ভোট গণনার সময় এজেন্টদের সরিয়ে নেওয়া। যদি এজেন্টদের সরিয়ে নেওয়া না হতো তাহলে আমরা ১২ পদে জয়ী হতাম।

বার সভাপতি বলেন, তারেক রহমান আমাদের প্যানেল ঘোষণা করেছেন। বিএনপির পার্টি অফিসে সবার উপস্থিতিতে এ ঘোষণা দেওয়া হয়। তারেক রহমান তো বলেনি তোমরা ভোট গণনায় যেও না, সভাপতির দায়িত্ব নিও না। তাহলে দায়িত্ব নিও না, একথা বলার কায়সার কামাল কে? যদি আমরা ১২ পদে জয়ী হতাম তাহলে গণতন্ত্র ও ভোটাধিকারের আন্দোলন শক্তিশালী করতে পারতাম। কার সঙ্গে আঁতাত করে কায়সার কামাল সরকারকে পূর্ণ প্যানেলে জয়ী করার পেছনে কাজ করছিল।

তিনি বলেন, বার নির্বাচনে আমরা সরকারের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছি। কিন্তু কায়সার কামালের ষড়যন্ত্রের কারণে সেই যুদ্ধে পুরোপুরি জয়ী হতে পারিনি। তিনি নির্বাচনের সময় উপস্থিত না থেকে বিভিন্ন জেলায় ঘুরে বেড়িয়েছেন। তারেক রহমানের ঘোষিত প্যানেলের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন।

আরও পড়ুন: মাহবুব উদ্দিন খোকনকে আইনজীবী ফোরাম থেকে অব্যাহতি

কায়সার কামালকে অর্বাচীন বালক হিসেবে উল্লেখ করে ব্যারিস্টার খোকন বলেন, তিনি একজন আত্মস্বীকৃত অপরাধী। একজন আইনজীবীর স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়া করতে গিয়ে হাতেনাতে ধৃত হন। ওই আইনজীবী কায়সার কামালকে মারপিট করে কলাবাগান থানা পুলিশে সোপর্দ করে। মামলা হলে ওই নারীর কাছে না যাওয়ার শর্তে হাইকোর্ট থেকে জামিন নেন। কিন্ত পরে শর্ত ভঙ্গ করে কায়সার কামাল ওই আইনজীবীর স্ত্রীর সঙ্গে পরে যোগাযোগ রাখেন এবং বিয়ে করেন, কিন্ত কাবিন করেনি। তার ছয় মাসের বাচ্চা আছে। এটা কায়সার কামালের তৃতীয় স্ত্রী। সুপ্রিমকোর্টে ২৫/২৬ শ’ নারী আইনজীবী রয়েছেন। তাদের যেন কোনো ক্ষতি না হয়।

খোকন বলেন, এমন ব্যক্তি কীভাবে আইনজীবীদের নেতা হন। নৈতিক স্খলনের কারণে আইনজীবী ফোরামে তার সদস্যপদ থাকা উচিত নয়। সরকারের এই ‘এজেন্টকে’ দল থেকে বহিষ্কার করা উচিত। আমি মনে করি কায়সার কামালের ভূমিকা বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্যদের তদন্ত করা উচিত।

তিনি আরও বলেন, জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম ছিল টিএইচ খানের মতো আইনজীবীদের নেতৃত্বে। সেই সংগঠনকে পাশ কাটিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম করে কায়সার কামাল। তিনি বলেন, ওয়ান ইলেভেনের সময় কায়সার কামালদের ভূমিকা কী ছিল? কোথায় ছিলেন তিনি ওই সময়। তবে অভিযোগ প্রসঙ্গে ব্যারিস্টার কায়সার কামালের বক্তব্য জানতে চাইলে সাংবাদিকদের তিনি আপাতত কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

প্রসঙ্গত, এবারের নির্বাচনে ১৪টি পদের বিপরীতে সভাপতিসহ চারটি পদে বিজয়ী হয়েছিল বিএনপি সমর্থিত জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ঐক্য প্যানেল। অপরদিকে সম্পাদকসহ ১০টি পদে বিজয়ী হয়েছে সরকার সমর্থিত বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ। গত ৬ ও ৭ মার্চ নির্বাচন শেষে ৯ মার্চ রাতে ভোট গণনা শেষে ফলাফল ঘোষণা করেন নির্বাচন পরিচালনা উপ-কমিটির আহ্বায়ক সিনিয়র অ্যাডভোকেট বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল খায়ের। এরপর বিএনপি সমর্থিত বিজয়ী সভাপতি ব্যারিস্টার এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকনসহ চারজনকে দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে গত ২৭ মার্চ চিঠি দিয়েছিল জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। তবে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের চিঠি পাওয়ার পরও অপর তিনজন দায়িত্ব গ্রহণ থেকে বিরত থাকলেও গত ৪ এপ্রিল দায়িত্ব নেন মাহবুব উদ্দিন খোকন। এটাকে চরম দলীয় শৃঙ্খলা পরিপন্থি উল্লেখ করে শনিবার তাকে ফোরাম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।