ঈদে ঘরে ফিরতে অনলাইনে প্লেন, বাস ও ট্রেনের টিকেট কাটার উপায় - BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, বিকাল ৩:৫২, ৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ


 

ঈদে ঘরে ফিরতে অনলাইনে প্লেন, বাস ও ট্রেনের টিকেট কাটার উপায়

banglanewsus.com
প্রকাশিত এপ্রিল ৩, ২০২৪
ঈদে ঘরে ফিরতে অনলাইনে প্লেন, বাস ও ট্রেনের টিকেট কাটার উপায়

প্রসঙ্গ যখন ডিজিটাল বাংলাদেশের, তখন প্রথমেই আসে জনসাধারণের সুযোগ-সুবিধাগুলোর কার্যকারিতার কথা। এখানে হাজারও প্রতিবন্ধকতার মাঝে উন্নয়নের মুখ দেখতে শুরু করেছে দেশের পরিবহন ব্যবস্থা। দীর্ঘ লাইনে না দাঁড়িয়ে ঘরে বসেই টিকেট কাটতে অভ্যস্ত হতে শুরু করেছে সাধারণ মানুষ। এর ফলে কিছুটা হলেও মুক্তি মিলছে ঈদের সময়ের চরম দুর্ভোগ থেকে। তাছাড়া দেশের পর্যটন ও পরিবহন খাতে তথ্য-প্রযুক্তির যে সঠিক প্রয়োগ হচ্ছে, এটি তারও এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। চলুন, প্লেন, বাস, ও ট্রেনের ই-টিকেট করার ১০টি নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে জেনে নেওয়া যাক।

প্লেন, বাস, ও ট্রেনের টিকেট কাটার কয়েকটি অনলাইন পরিষেবা
বাংলাদেশ রেলওয়ে ই-টিকেটিং সার্ভিস ২০১২ সালের ২৯ মে চালু হয় ঘরে বসে অনলাইনে ট্রেনের টিকেট কাটার ব্যবস্থা। বিভিন্ন ব্যাংক বা এমএফএস (মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস)-এর বদৌলতে দিন দিন আরও নির্ভরযোগ্য হয়ে উঠছে এই সরকারি পরিষেবা।

eticket.railway.gov.bd ওয়েব ঠিকানায় যেয়ে সর্বোচ্চ ১০ দিন আগে থেকে টিকিট কাটা যায়। এখানে প্রয়োজন হয় জাতীয় পরিচয়পত্র এবং মোবাইল নাম্বার। বাংলাদেশ রেলওয়ের নিজস্ব অ্যাপ ‘রেল সেবা’ আরও এক ধাপ উন্নত করেছে বিআরআইটিএস (বাংলাদেশ রেলওয়ে ইন্টিগ্রেটেড টিকেটিং সিস্টেম) ব্যবস্থাকে।

যারা ট্রেনে যেতে চান, তারা এক লেনদেনে সর্বোচ্চ মোট ৪টি টিকিট কিনতে পারেন। প্রতিদিন লেনদেন করা যায় সর্বোচ্চ ২টি; অর্থাৎ একজন যাত্রী এক দিনে সর্বোচ্চ ৮টি টিকিট কাটতে পারেন।

তবে এই ঈদে ৩ এপ্রিল থেকে ৯ এপ্রিল পর্যন্ত শুধুমাত্র ১টি লেনদেন করা যাবে। ফলে সর্বোচ্চ ৪টি সিট পাওয়ার উপায় থাকছে। এই নিয়ম ফেরার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য যা নির্ধারিত থাকবে ১৩ থেকে ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স
২০১০ সালে অনলাইন বিমান টিকেট বুকিং সুবিধা যুক্ত হয় বিমান বাংলাদেশের গ্রাহকদের জন্য। ২০১৯-এ অ্যান্ড্রয়েড এবং অ্যাপেল দুই ব্যবহারকারীদের জন্যই তৈরি হয় বিমান অ্যাপ। আসন্ন ঈদে biman-airlines.com ও বিমান অ্যাপ থেকে টিকেট ক্রয়কারীদের জন্য নতুন সুযোগ রয়েছে। টিকেট ক্রয়ের সময় BGDEAL24 প্রোমোকোড ব্যবহার করে যাত্রীরা নির্ধারিত ভাড়া থেকে ১০ শতাংশ ছাড় পাবেন।

বিমান বাংলাদেশ অনুমোদিত ট্রাভেল এজেন্সি থেকে টিকেট ক্রয়ের সুযোগ রয়েছে। এছাড়া রয়েছে বিমান স্মার্ট কল সেন্টার নাম্বার ১৩৬৩৬। এটি প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত গ্রাহকদের জন্য উন্মুক্ত থাকে।

সহজ
মূলত বাসের টিকেটের জন্য জনপ্রিয়তা পেলেও সহজ বাংলাদেশ রেলওয়ের সবচেয়ে বেশি টিকেট বিক্রয়ের রেকর্ড রয়েছে। ট্রেনের টিকিটগুলো বিআরআইটিএস ইস্যু করলেও সামগ্রিক কারিগরি বিষয়গুলো দেখাশোনা করে সহজ-সাইনেসিস-ভিন্সেন জেভি সিস্টেম।

মালিহা এম কাদির ২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠা করেন সহজ। shohoz.com ওয়েবসাইটটি দেশের প্রায় সব পরিবহন প্রতিষ্ঠান, তাদের স্ব স্ব যাত্রাপথ, ও ভাড়া সংক্রান্ত তথ্যের এক বিশাল সংগ্রহশালা। বাস-ট্রেনের পাশাপাশি এখানে লঞ্চ এবং দেশের অভ্যন্তরীণ প্লেনের টিকেটও পাওয়া যায়।

যে কোনও পরিবহনে যাত্রা পরিবর্তন বা বাতিলকরণে তাদের গ্রাহক সেবা নাম্বার ১৬৩৭৪ সার্বক্ষণিক উন্মুক্ত।

বাসবিডি এবং বিডিটিকেটস
রবি আজিয়াটার টিকেটিং পোর্টাল বাসবিডি ও বিডিটিকেটস বাসের টিকেট সংগ্রহের জন্য আরও দুটি প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে বাসবিডির সাইট busbd.com.bd ২০১৩ সালে এবং বিডিটিকেটসের সাইট bdtickets.com ২০১৫ সালে চালু হয়। বর্তমানে অবশ্য বাসবিডি new.busbd.com.bd ওয়েব ঠিকানার মাধ্যমে পরিচালিত হচ্ছে। তবে তাদের মোবাইল অ্যাপ একটি; বিডিটিকেটস, যার অ্যান্ড্রয়েড এবং অ্যাপেল দুই সংস্করণই আছে।

ওয়েবসাইটে যাত্রীর নিজস্ব অ্যাকাউন্ট থেকে অথবা অ্যাপ থেকে যাত্রা সময় পরিবর্তন বা বাতিল সবই করা যায়। এ ক্ষেত্রে সরাসরি যোগাযোগের জন্য রয়েছে হটলাইন নাম্বার ১৬৪৬০। বাসের টিকেটগুলো অনলাইনে বুকিং দেওয়া গেলেও প্লেন বা লঞ্চের টিকেটের জন্য এই নাম্বারে ফোন দিয়ে বুকিং দিতে হয়।

অবশ্য ঈদের সময়টা একদম ভিন্ন। এ সময় কোনও টিকিট বাতিল বা যাত্রার সময় পরিবর্তনের উপায় নেই। আগামী ১ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত এই নিয়ম বহাল থাকবে।

যাত্রী
বাস ট্র্যাকিং-এর অনন্য সুবিধা যাত্রী নামক এই টিকিটিং প্ল্যাটফর্মকে আলাদা করেছে অন্যান্য পরিবহন পরিষেবাগুলো থেকে। বাসের বর্তমান অবস্থান দেখে কখন সেটি স্ট্যান্ডে পৌঁছাবে তার একটা ধারণা লাভ করতে পারেন যাত্রীরা।

২০১৯ সাল থেকে চালু হওয়া infojatri.co ওয়েবসাইটটি এভাবেই সেবা দিয়ে যাচ্ছে যাত্রীদের।

টিকিট বাতিল বা যাত্রার সময় পরিবর্তনের জন্য যোগাযোগের নাম্বার ০৯৬৪২০৮০৮০৮। সঙ্গত কারণে ফেরতযোগ্য অর্থ যাত্রীকে ৫ কার্যদিবসের মধ্যে ফেরত দিয়ে থাকে। অবশ্য ঈদের সময়ের ক্ষেত্রে রিফান্ড তখনই করা হয়, যখন স্বয়ং পরিবহন প্রতিষ্ঠান ট্রিপ বাতিল করে এবং বিকল্প কোনও ট্রিপের ব্যবস্থা করে দিতে না পারে।

পরিবহন
দেশের অন্যান্য পরিবহন সেবার সঙ্গে এপিআই (অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টার্ফেস) ইন্টিগ্রেশনের মাধ্যমে paribahan.com ওয়েবসাইটটি একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ সেবা প্রদান করতে পারে। ফলে শুধু বাসেরই নয়, লঞ্চ ও প্লেনের টিকেটেরও ব্যবস্থা করতে পারে পরিবহন। এছাড়া টিকেট নিশ্চিতকরণে সার্বক্ষণিক সচল থাকে হটলাইন নাম্বার ০৯৬১৩৫৫৫০০০। সেই সঙ্গে রয়েছে দেশের প্রায় সবগুলো পেমেন্ট সিস্টেমের সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের সুবিধা।

অন্যান্য ডিজিটাল পরিষেবার ন্যায় পরিবহনেও ১ থেকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত টিকেটের কোনও পরিবর্তন বা বাতিল গ্রহণযোগ্য নয়।

চক্রযান
মোহাম্মদ আল-আমিন হোসেন ২০১৯ সালে প্রতিষ্ঠা করেন চক্রযান। Chokrojan.com ওয়েবসাইটে রয়েছে ব্যবহারকারীদের জন্য স্বতন্ত্র অ্যাকাউন্ট ব্যবস্থাপনার সুযোগ। ফলে নিজ প্রোফাইল থেকেই যাত্রীরা টিকেটের পরিবর্তন সম্পর্কে আবেদন রাখতে পারেন। চক্রযানের শুধুমাত্র অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ আছে। এই অ্যাপ আর হটলাইন নাম্বার ০১৭৯৯০০৫৭৪৭-এ যোগাযোগের মাধ্যমেও টিকেটে প্রয়োজনীয় পরিবর্তনের আবেদন রাখা যায়। তবে এই সুযোগটি ঈদের মৌসুমে থাকে না।

শেয়ার ট্রিপ
২০১৩ সালে ট্রাভেল বুকিং বিডি নামক ফেসবুক পেজের মাধ্যমে প্লেনের টিকেট ব্যবসায়ে অসামান্য সাড়া পান কাশেফ রহমান। এই ট্রাভেল বুকিং বিডি পরবর্তীতে ফুলে ফেপে ২০১৪ সালে শেয়ার ট্রিপ-এর জন্ম দেয়। এটিই বাংলাদেশের প্রথম অনলাইন বিমান টিকেটিং সিস্টেম, যেটি শুরু থেকে ন্যাশনাল ও ইন্টারন্যাশনাল দুই ফ্লাইট-ই পরিচালনা করে আসছে।

শেয়ার ট্রিপের অ্যান্ড্রয়েড ও অ্যাপেল দুই প্ল্যাটফর্মের জন্যই মোবাইল অ্যাপ রয়েছে। এমনকি sharetrip.net ওয়েবসাইট ও অ্যাপ দুটোই ফ্লাইটগুলোর বর্তমান সময় ও মূল্য তালিকা প্রদর্শন করে। অর্থ পরিশোধের পর কর্মদিবসে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইস্যুকৃত ই-টিকিট ইমেইলের মাধ্যমে যাত্রীকে পাঠানো হয়। তবে ছুটি ও সপ্তাহাহের শেষ দিনগুলোতে সর্বোচ্চ ৪৮ ঘণ্টা সময় লাগতে পারে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।