ইউরোপীয় আদালতের রায়ে ক্ষুব্ধ ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি – BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, রাত ৪:৩৫, ৭ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ



 

ইউরোপীয় আদালতের রায়ে ক্ষুব্ধ ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি

newsup
প্রকাশিত আগস্ট ৬, ২০২৫
ইউরোপীয় আদালতের রায়ে ক্ষুব্ধ ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি

Manual2 Ad Code

ডেস্ক রিপোর্ট

‘নিরাপদ দেশ’ নিয়ে ইউরোপীয় আদালতের রায়ে ক্ষুব্ধ মেলোনি ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি। তিনি ইউরোপীয় বিচার আদালতের (সিজেইইউ) এক সাম্প্রতিক রায়কে তার সরকারের অভিবাসন নীতির জন্য ‘বাধা’ বলে অভিহিত করেছেন। গত ১ আগস্ট ওই রায়ে বলা হয়, ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কোনও সদস্য রাষ্ট্র চাইলে নিজ সিদ্ধান্তে কোনও তৃতীয় দেশকে ‘নিরাপদ’ হিসেবে ঘোষণা করতে পারে। তবে সেটি অবশ্যই একটি বিচারিক মূল্যায়নের ভিত্তিতে হতে হবে।
এই রায়কে কেন্দ্র করে মেলোনির ডানপন্থি জোট সরকার চায়, ইউরোপীয় ইউনিয়ন যেন নতুন করে ‘নিরাপদ দেশের সংজ্ঞা’ নির্ধারণ করে এবং সে অনুযায়ী, নতুন অভিবাসন আইন পাস করে। এই আইন ইউরোপীয় মাইগ্রেশন ও অ্যাসাইলাম প্যাক্টের অংশ হিসেবে আগামী বছরের ১২ জুন থেকে কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে
সিজেইইউর রায়ে বলা হয়, কোনও দেশকে তখনই ‘নিরাপদ’ বলা যাবে, যখন তা তার সম্পূর্ণ ভূখণ্ডে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে এবং কোনও গোষ্ঠী, ধর্ম বা সংখ্যালঘুর প্রতি বৈষম্য না করে।

এই ব্যাখ্যা ইতালির জন্য সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ তারা বাংলাদেশ ও মিসরসহ কিছু দেশকে ‘নিরাপদ’ ঘোষণা দিয়ে সেই দেশ থেকে আসা অভিবাসীদের দ্রুত প্রক্রিয়ায় ফেরত পাঠানোর পরিকল্পনা করেছিল। এর অংশ হিসেবে আলবেনিয়ায় একটি প্রত্যাবাসন কেন্দ্র চালু করা হয়েছিল; যেখানে আশ্রয় আবেদনকারীদের দ্রুত নিষ্পত্তি করে ফেরত পাঠানোর কথা ছিল।
ইতালির সরকারের দাবি, সিজেইইউ তাদের ‘রাজনৈতিক এখতিয়ারে’ হস্তক্ষেপ করেছে। মেলোনির অফিস এক বিবৃতিতে বলেছে, এই রায় ইইউ আদালতকে কেবল ব্যক্তিগত মামলা নয়, বরং পুরো অভিবাসন প্রত্যাবাসন নীতির ওপর নিয়ন্ত্রণ দিয়ে দিচ্ছে। অথচ এটি একটি স্পষ্ট রাজনৈতিক প্রশ্ন।

তবে তারা বলেছে, আলবেনিয়ার জাদার প্রত্যাবাসন কেন্দ্রটি চলমান থাকবে, যদিও দ্রুত প্রক্রিয়ার জন্য গঠিত শরণার্থী কেন্দ্র আপাতত অচল রয়েছে। এই মামলায় ইতালির একটি আদালত বলেছেন, তাদের কাছে এমন কোনও বিশ্বাসযোগ্য তথ্য নেই; যার ভিত্তিতে বাংলাদেশকে নিরাপদ দেশ ঘোষণা করা যেতে পারে। যে কারণে তারা ইউরোপীয় আদালতে এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে।

Manual7 Ad Code

এর আগে, ভূমধ্যসাগরে উদ্ধার হওয়া বেশ কয়েকজন বাংলাদেশি অভিবাসীকে আলবেনিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আদালতের মতে, এভাবে দ্রুত আবেদন বাতিল করে ফেরত পাঠানো আইনি ভিত্তিহীন।

জর্জিয়া মেলোনি আদালতের ওই রায়কে ইতালির অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও সীমান্ত রক্ষার পরিকল্পনায় হস্তক্ষেপ বলে অভিহিত করেছেন। একইসঙ্গে রায়ে বলা হয়েছে, এমন সিদ্ধান্ত ইইউর বর্তমান অভিবাসন আইন পরিপন্থী।

Manual1 Ad Code

এই অবস্থায় ইতালি ইউরোপীয় কমিশনের কাছে আইন সংস্কারের দাবি জানিয়েছে। এটি মূলত চলতি বছরের ২০ মে উত্থাপিত একটি প্রস্তাব। এতে বলা হয়েছে, ‘নিরাপদ উৎস দেশের’ পরিধি বাড়িয়ে অভিবাসন সংক্রান্ত চাপ কমানো হবে।

প্রস্তাব অনুযায়ী, ভবিষ্যতে কোনও ব্যক্তির কোনও ‘নিরাপদ’ দেশ অতিক্রম করাই তার আশ্রয় আবেদন বাতিল করার জন্য যথেষ্ট হবে। এছাড়া ইইউ সদস্য রাষ্ট্রগুলো চাইলে নিজেদের মতো করে নিরাপদ দেশের তালিকা করতে পারবে এবং অ-ইউ দেশেও অভিবাসীদের ফেরত পাঠাতে পারবে।

ইতালি ২০২৫ সালের মধ্যেই এই নতুন আইন পাস করতে চায়। ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লিয়েন এবং ইউরোপের অভিবাসন ইস্যুতে কঠোর অবস্থানের সমর্থক দেশগুলো এই সংস্কারে মেলোনির পাশে রয়েছে।

Manual1 Ad Code

ডেনমার্ক, জার্মানির চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ ম্যাৎর্স এবং ইউরোপীয় কমিশনের বর্তমান প্রেসিডেন্টও এই অবস্থানে সমর্থন জানিয়েছেন। তবে আইনি সংস্কার পাস করতে গেলে ইউরোপীয় কমিশনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাগবে এবং পরে সেটি ইউরোপীয় পার্লামেন্ট থেকেও অনুমোদন নিতে হবে। পার্লামেন্টে অবশ্য বর্তমান ইউরোপীয় কমিশনের জনপ্রিয়তা কম।

ইউরোপীয় পার্লামেন্টে মেলোনির দল ব্রাদার্স অব ইটালির প্রতিনিধি কার্লো ফিদাঞ্জা বলেছেন, ইউরোপীয় আদালতের এই রায় ইইউ কমিশনের তৈরি করা নিরাপদ দেশের তালিকার বিরুদ্ধে চলে গেছে। এই তালিকায় বাংলাদেশও অন্তর্ভুক্ত ছিল। বাংলাদেশ থেকে ইতালিতে আসা অভিবাসনপ্রত্যাশীদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি।

ইতালির অভিবাসন নীতি গত কয়েক বছর ধরেই অতি ডান অবস্থান নিয়েছে। ২০২২ সালের নির্বাচনে মেলোনির নেতৃত্বে ডানপন্থী জোট অভিবাসন বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসে। আলবেনিয়ার সঙ্গে চুক্তি সেই প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন হিসেবে দেখা হচ্ছিল।

Manual5 Ad Code

কিন্তু এখন ইউরোপীয় আদালতের রায়ে এই পরিকল্পনা আইনি বাধায় পড়ে গেছে। পাশাপাশি, সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, আলবেনিয়ায় নির্মিত প্রত্যাবাসন কেন্দ্রের খরচ ইতালির ভেতরে একই ধরনের একটি কেন্দ্রের তুলনায় সাত গুণ বেশি। ইনফোমাইগ্রেন্টস। ডেস্ক বিজে

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।
Manual1 Ad Code
Manual2 Ad Code