বাংলাদেশে তবু কার্যকর হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি – BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, দুপুর ২:৫৩, ১০ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ


 

বাংলাদেশে তবু কার্যকর হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি

প্রকাশিত নভেম্বর ২, ২০২০
বাংলাদেশে তবু কার্যকর হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি

Manual1 Ad Code

প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসে বিপর্যস্ত গোটা বিশ্ব। দ্বিতীয় দফায় করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বাড়তে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা আগেই সতর্ক করে দিয়েছিলেন। এরই মধ্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। যার পরিপ্রেক্ষিতে নতুন করে কড়াকড়ি শুরু হয়েছে বিভিন্ন দেশে। সংক্রমণ বাড়ায় ব্রিটেনে আজ থেকে চার সপ্তাহের লকডাউন শুরু হচ্ছে। করোনা ভাইরাসের বিস্তার রোধে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন নতুন করে আগামী দিনগুলোর জন্য বেশি ভীতিকর বার্তা দিয়ে বলেছেন, সব রেস্তোরাঁ, ব্যায়ামাগার, পানশালা এবং দৈনন্দিন প্রয়োজনে জরুরি নয় এমন দোকানপাট চার সপ্তাহের জন্য বন্ধ থাকবে। তবে গতবারের লকডাউনের সঙ্গে খানিকটা পার্থক্য থাকবে এবার। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় খোলা থাকবে। ডিসেম্বরের ২ তারিখের পর লকডাউন শিথিল করা হবে। বাংলাদেশেও বিশেষজ্ঞরা করোনার দ্বিতীয় ওয়েব আসার আশঙ্কা প্রকাশ করলেও কার্যকর হচ্ছে না মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়টি।

 

Manual3 Ad Code

অক্টোবরের শেষ সপ্তাহের প্রথম দিকে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে সব মন্ত্রণালয়ের সচিব উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে করোনার দ্বিতীয় ওয়েব আসলে তা মোকাবিলার প্রস্তুতি হিসেবে কার কী কাজ তা ঠিক করে দিয়ে বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এক সপ্তাহের বেশি সময় অতিবাহিত হলেও তার বেশির ভাগই এখনো বাস্তবায়ন হয়নি। মাস্ক পরাসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে বাধ্য করার বিষয়টি এখনো কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। বৈঠকে উপস্থিত এক জন কর্মকর্তা জানান, ধর্ম মন্ত্রণালয়কে বলা হয়েছিল দেশের সব মসজিদসহ অন্যান্য ধর্মের উপাসনালয়ে অন্তত দিনে দুইবার করে মাস্ক পরার রাষ্ট্রীয় আদেশের বিষয়টি বলতে। কিন্তু তারাও সেটি বাস্তবায়ন করেনি। এদিকে মাস্ক পরতে প্রয়োজনে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিলেও সেটিও বাস্তবায়ন হয়নি এখনো। সরকারি-বেসরকারি সব প্রতিষ্ঠানে মাস্ক ছাড়া প্রবেশ না করা এবং সেবা না দিতে নির্দেশনা দেওয়া হলেও সেটি কার্যকর হয়নি।

 

Manual3 Ad Code

স্বাস্থ্যবিধি মেনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ করোনা ভাইরাস মহামারির ছোবল অনেকটাই সামলে নিতে পারলেও যে কয়েকটি দেশ বেশি সময় ধরে ধুঁকছে তার একটি বাংলাদেশ; সংক্রমণের মধ্যেই স্বাভাবিক জীবনে ফেরা এখানকার লোকজনের একটি বড় অংশই বাইরে মাস্ক পরতেও চাচ্ছেন না। মাস্ক না পরার পেছনে নানা অজুহাত দাঁড় করাচ্ছেন তারা, আবার না পরার কারণ জিজ্ঞেস করলে ক্ষেপে উঠছেন কেউ কেউ। সম্প্রতি ঘরের বাইরে সবার মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করেছে সরকার। এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ কার কী ভূমিকা হবে সে বিষয়েও বলা হয়েছে। তার পরেও ‘মাস্ক পরলেই কি করোনা ভাইরাস ঠেকানো যাবে?’, ‘মাস্ক পরলে দম বন্ধ হয়ে আসে’, ‘মাস্ক পরলে বিরক্ত লাগে’—এমন নানা অজুহাতে মাস্ক ছাড়াই ঘর থেকে বের হয়ে পড়ছেন নাগরিকরা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত চিকিত্সক অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, করোনা একটি অদৃশ্য ভাইরাস। এর কারণ সারা বিশ্বের চিকিত্সা বিজ্ঞানীরা এখনো পর্যন্ত নির্ণয় করতে পারেননি। ব্রিটেন, স্পেন, ইতালিসহ ইউরোপের অনেক দেশে করোনার দ্বিতীয় ওয়েব শুরু হয়েছে। এ থেকে রক্ষা পাওয়ার একমাত্র উপায় স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে, মাস্ক পরতে হবে। এর কোনো বিকল্প নেই।

সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট আইইডিসিআরের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এ এস এম আলমগীর বলেন, মাস্ক পরলে ৮০ ভাগ নিরাপদ থাকা যায়। এতে একে অপরকে সুরক্ষা রাখে। বিশ্বের বিজ্ঞানীদের সর্বশেষ তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, করোনায় আক্রান্ত ৮২ ভাগ মানুষ লক্ষণবিহীন। তাই মাস্ক পরা ছাড়া বিকল্প নেই। ভ্যাকসিন দিলেও মাস্ক পরতে হবে।

করোনা মোকাবিলায় গঠিত জাতীয় টেকনিক্যাল পরামর্শক কমিটির সদস্য, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইরোলজি বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম বলেন, মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা দরকার। সবার ভ্যাকসিন নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত মাস্ক পরতে হবে।

Manual2 Ad Code

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম বলেন, আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্বাস্থ্যে পাঁচ দফা নির্দেশনা বাস্তবায়ন করতে বলা হয়েছিল। এর মধ্যে পর্যাপ্ত ওষুধ মজুত, চিকিত্সাসেবার পরিকল্পনা রয়েছে। এরই মধ্যে এসব প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।

এদিকে নির্বাচন সামনে রেখে যুক্তরাষ্ট্রে করোনা পরিস্থিতি ভয়াবহ। ডোনাল্ড ট্রাম্পের ১৬টি নির্বাচনি সভা থেকে ৩০ হাজার মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। এদের মধ্যে মারা গেছেন ৭০০ জন।

Manual1 Ad Code

 

 

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।
Manual1 Ad Code
Manual5 Ad Code