প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়াতে সৈন্য সংকট মোকাবিলায় বড় চ্যালেঞ্জে কানাডার সশস্ত্র বাহিনী – BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, বিকাল ৪:১০, ১০ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ


 

প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়াতে সৈন্য সংকট মোকাবিলায় বড় চ্যালেঞ্জে কানাডার সশস্ত্র বাহিনী

newsuk
প্রকাশিত অক্টোবর ১০, ২০২৫
প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়াতে সৈন্য সংকট মোকাবিলায় বড় চ্যালেঞ্জে কানাডার সশস্ত্র বাহিনী

Manual1 Ad Code

ডেস্ক রিপোর্ট : কানাডা ২০৩৫ সালের মধ্যে জাতীয় উৎপাদনের (জিডিপি) ৫ শতাংশ প্রতিরক্ষা খাতে বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ন্যাটোর নতুন নীতিমালায় সদস্য দেশগুলোকে প্রতিরক্ষা বাজেট বাড়ানোর যে চাপ দেওয়া হয়েছে, সেটির প্রতিফলন হিসেবেই এই ঘোষণা আসে। তবে অর্থ বরাদ্দের পাশাপাশি কানাডার জন্য সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে সৈন্য সংকট এবং সশস্ত্র বাহিনীর (সিএএফ) অভ্যন্তরীণ কাঠামোগত দুর্বলতা। সামরিক বিশ্লেষকদের মতে, শুধু অর্থ বাড়ালেই হবে না একটি গভীর সংস্কার ছাড়া এই প্রতিশ্রুতি পূরণ করা প্রায় অসম্ভব।

Manual2 Ad Code

সোমবার কানাডার সিটিভি ইয়র মর্নিং-এ দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে সিএএফ-এর অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল ও সামরিক বিশ্লেষক ডেভিড ফ্রেজার বলেন, বর্তমানে বাহিনীতে প্রায় ১৬ হাজার সদস্যের ঘাটতি রয়েছে। তাঁর মতে, সরকারের প্রতিশ্রুত অর্থ সঠিকভাবে কাজে লাগাতে হলে বাহিনীকে “ব্যাপকভিত্তিক অভ্যন্তরীণ সংস্কার” করতে হবে। তবে এই পরিবর্তন তাৎক্ষণিকভাবে সম্ভব নয়; আগামী কয়েক বছরের মধ্যে বড় ধরনের অগ্রগতি আশা করা কঠিন।

ন্যাটো দীর্ঘদিন ধরে সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে জিডিপির অন্তত ২ শতাংশ প্রতিরক্ষায় ব্যয় করার আহ্বান জানাত। কিন্তু সম্প্রতি সংস্থাটি তার নীতিমালা পরিবর্তন করে ব্যয় বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে এখন লক্ষ্য দাঁড়িয়েছে জিডিপির ৫ শতাংশ। একমাত্র স্পেন এই বাড়তি শর্ত থেকে অব্যাহতি পেয়েছে। কানাডার প্রধানমন্ত্রী মার্ক কার্নি গত মাসে ঘোষণা দিয়েছেন, চলতি অর্থবছর শেষে দেশটি প্রতিরক্ষায় জিডিপির ২ শতাংশ ব্যয় করবে এবং ধাপে ধাপে সেই ব্যয় বাড়িয়ে ৫ শতাংশে উন্নীত করা হবে।

কানাডার প্রতিরক্ষা সংকটে আরেকটি বড় বাধা হচ্ছে তরুণ প্রজন্মের অনীহা। সম্প্রতি অ্যাঙ্গাস রিড ইনস্টিটিউটের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, যদি সামরিক সংঘাত দেখা দেয় তবে মাত্র অর্ধেক কানাডিয়ান সশস্ত্র বাহিনীতে যোগ দিতে আগ্রহী। সবচেয়ে উদ্বেগজনক হলো, তরুণদের (১৮-৩৪ বছর বয়সী) মধ্যে এই হার আরও কম মাত্র ৪৩ শতাংশ। ফলে নিয়োগ প্রচারণা জোরদার করলেও তরুণদের আস্থা অর্জন একটি দীর্ঘমেয়াদি কাজ বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

Manual6 Ad Code

ন্যাশনাল ডিফেন্স বিভাগের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, কানাডার নিয়মিত বাহিনীতে বর্তমানে প্রায় ৬৩ হাজার ৫০০ সদস্য এবং রিজার্ভ বাহিনীতে রয়েছেন ২৩ হাজার। নিয়োগ প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে ২০২৪ সালের ১ এপ্রিল থেকে ২০২৫ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত সময়কালে ডিএনডি নতুন করে ৬ হাজার ৭০০ সদস্য নিয়োগ দিয়েছে, যা তাদের নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা (৬ হাজার ৪৯৬) ছাড়িয়ে গেছে। এটি আগের বছরের তুলনায় ৫৫ শতাংশ বেশি এবং গত এক দশকের মধ্যে সর্বোচ্চ সাফল্য।

Manual2 Ad Code

প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে নিয়মিত বাহিনীর সদস্য সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াবে ৭১ হাজার ৫০০ এবং রিজার্ভ বাহিনীর সংখ্যা হবে ৩০ হাজার। তবে বিশ্লেষকরা মনে করছেন, শুধু সংখ্যার দিক থেকে নয়, বাহিনীকে আরও আধুনিক, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং দক্ষ কাঠামোয় রূপান্তরিত করাই হবে মূল চ্যালেঞ্জ।

কানাডার প্রতিরক্ষা ব্যয় বাড়ানোর আর্থিক সক্ষমতা নিয়ে কোনো প্রশ্ন নেই। কিন্তু জনবল সংকট এবং কাঠামোগত দুর্বলতা সমাধান না হলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কানাডার সামরিক ভূমিকা ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। অর্থাৎ অর্থনৈতিক প্রতিশ্রুতি থাকলেও, মানবসম্পদের সীমাবদ্ধতা কাটানোই এখন কানাডার প্রতিরক্ষা কৌশলের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। ন্যাটোর চাপ মেটাতে কানাডা যদি বাস্তবিক পরিবর্তন আনতে চায়, তবে এখনই শুরু করতে হবে ব্যাপকভিত্তিক সংস্কার। অন্যথায় প্রতিশ্রুত বিনিয়োগ সত্ত্বেও বৈশ্বিক নিরাপত্তা অঙ্গনে কানাডার অবস্থান প্রশ্নের মুখে পড়তে পারে।

Manual1 Ad Code

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।
Manual1 Ad Code
Manual4 Ad Code