ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি অসন্তুষ্ট ৮০% কানাডিয়ান – BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, সন্ধ্যা ৬:২৯, ৩০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ


 

ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি অসন্তুষ্ট ৮০% কানাডিয়ান

newsuk
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৫
ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি অসন্তুষ্ট ৮০% কানাডিয়ান

Manual8 Ad Code

ডেস্ক রিপোর্ট : কানাডা-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যেই প্রকাশিত হলো নতুন এক সমীক্ষার ফলাফল। আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা গ্যালাপ পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে, কানাডার জনগণের বিশাল অংশ যুক্তরাষ্ট্রের বর্তমান নেতৃত্ব ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি আস্থা হারিয়েছে। মে ও জুন ২০২৫-এ পরিচালিত জরিপ অনুযায়ী, প্রায় ৮০ শতাংশ কানাডিয়ান নাগরিক ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি অসন্তুষ্ট বলে জানিয়েছেন। মাত্র ১৫ শতাংশ নাগরিক ওয়াশিংটনের নেতৃত্বকে অনুমোদন দিয়েছেন, যা এ যাবৎকালের মধ্যে সবচেয়ে নিম্ন সমর্থন হার। বিশ্লেষকরা বলছেন, এ ফলাফল উত্তর আমেরিকার দুই প্রতিবেশী দেশের সম্পর্কের টানাপোড়েনের বাস্তব প্রতিফলন।

ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদেই কানাডায় তার জনপ্রিয়তা তলানিতে ছিল। যেখানে ২০১৮ সালে সমর্থন পেয়েছিলেন মাত্র ১৬% , সেখানে ২০২০ সালে তা সামান্য বেড়ে দাঁড়ায় ১৭%-এ। কিন্তু দ্বিতীয় মেয়াদে এসে সেই হার আরও কমে সর্বনিম্ন ১৫%-এ নেমে এসেছে।এর বিপরীতে সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমলে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি কানাডিয়ান আস্থা ছিল তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি ৪১%। আর বারাক ওবামার সময়ে কানাডিয়ানদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বের সমর্থন গড়ে দাঁড়িয়েছিল ৬১%।গ্যালাপ ওয়ার্ল্ড পোল ২০০৫ সাল থেকে বিশ্বের ১৪০টিরও বেশি দেশে মানুষের রাজনৈতিক আস্থা ও মনোভাব যাচাই করছে।

সর্বশেষ জরিপে দেখা গেছে যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি কানাডিয়ানদের অসন্তুষ্টির হার ৭৯%, যা রাশিয়ার ক্ষেত্রে ৮২%। এবং চীনের ক্ষেত্রে অসন্তুষ্টির হার ৬৪% অর্থাৎ, ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতি কানাডার আস্থাহীনতা চীনের চেয়েও বেশি।তুলনায়, জার্মান নেতৃত্বের প্রতি ৫৪% কানাডিয়ান ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেছেন, যা বড় শক্তিগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ইতিবাচক রেটিং।বিশ্লেষকদের মতে, এই নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির পেছনে রয়েছে মূলত ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি ও বক্তব্য।শুল্কনীতি: দ্বিতীয় মেয়াদের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে ট্রাম্প কানাডার ওপর একাধিক দফা শুল্ক আরোপ করেছেন। বিশেষ করে ইস্পাত, অটোমোবাইল এবং কৃষিপণ্যে শুল্ক বৃদ্ধির কারণে কানাডার অর্থনীতি সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

Manual4 Ad Code

বিতর্কিত মন্তব্য: ট্রাম্পের প্রকাশ্য বক্তব্য যেমন কানাডাকে যুক্তরাষ্ট্রের “৫১তম অঙ্গরাজ্য” হওয়ার প্রস্তাব অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে শঙ্কা: জরিপে অংশগ্রহণকারীদের অনেকেই জানিয়েছেন, ট্রাম্প প্রশাসন উত্তর আমেরিকার মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি এবং দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে ঝুঁকির মুখে ফেলছে।কানাডিয়ান নাগরিকদের মতে, ট্রাম্পের পদক্ষেপ শুধু অর্থনীতিতেই নয়, দীর্ঘমেয়াদে সীমান্ত নীতি ও নিরাপত্তা সহযোগিতাকেও প্রভাবিত করতে পারে। উত্তর আমেরিকার দুই বৃহৎ অর্থনীতির মধ্যে সম্পর্ক শীতল হয়ে পড়ায় বাণিজ্য, বিনিয়োগ, এমনকি প্রতিরক্ষা খাতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন।

Manual1 Ad Code

গ্যালাপ জরিপ বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এই ফলাফল যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার নীতিনির্ধারকদের জন্য একটি স্পষ্ট সতর্কবার্তা। কানাডার জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার করতে ওয়াশিংটনের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। অন্যথায়, দুই দেশের দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতা আরও টানাপোড়েনের মুখে পড়বে।সার্বিকভাবে, কানাডার জনগণের চোখে ট্রাম্প প্রশাসন এখন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বের ইতিহাসে অন্যতম অজনপ্রিয় অবস্থানে। প্রশ্ন হচ্ছে, এই আস্থা সংকট কতটা গভীর হবে এবং তা উত্তর আমেরিকার ভবিষ্যৎ কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক মানচিত্রে কী প্রভাব ফেলবে।

Manual5 Ad Code

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।
Manual1 Ad Code
Manual4 Ad Code