ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার নোয়াহ অ্যালিসনের অবিশ্বাস্য সাফল্য: টানা সাত দিনে সাতটি ম্যারাথন – BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, সন্ধ্যা ৬:৩০, ৩০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ


 

ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার নোয়াহ অ্যালিসনের অবিশ্বাস্য সাফল্য: টানা সাত দিনে সাতটি ম্যারাথন

newsuk
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২৫
ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার নোয়াহ অ্যালিসনের অবিশ্বাস্য সাফল্য: টানা সাত দিনে সাতটি ম্যারাথন

Manual2 Ad Code

ডেস্ক রিপোর্ট : মানুষের ইচ্ছাশক্তি আর মানসিক দৃঢ়তা কতদূর যেতে পারে, তার অনন্য উদাহরণ হয়ে উঠেছেন ব্রিটিশ কলাম্বিয়ার তরুণ দৌড়বিদ নোয়াহ অ্যালিসন। টানা সাত দিনে সাতটি ম্যারাথন শেষ করে তিনি প্রমাণ করেছেন শারীরিক সীমাবদ্ধতা কেবলই একটি চ্যালেঞ্জ, যাকে দৃঢ় মনোবল দিয়ে জয় করা যায়।অ্যালিসনের এবারের দৌড় ছিল একেবারেই ব্যতিক্রমী। মোট ২৯৫ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছেন তিনি প্রতিদিন প্রায় ৪২ কিলোমিটার করে। আন্তর্জাতিকভাবে এটি “আল্ট্রা-চ্যালেঞ্জ” হিসেবে স্বীকৃত, যেখানে বিশ্বের মাত্র কয়েকশ মানুষ কখনো টানা সাত দিনে সাতটি ম্যারাথন সম্পন্ন করতে পেরেছেন। সেই তালিকায় এখন গর্বের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে নোয়াহ অ্যালিসনের নামও।

Manual8 Ad Code

২০২৩ সালে ক্যানসারে মারা যান নোয়াহর বাবা, মার্কাস অ্যালিসন। বাবার স্মৃতিকে ধারণ করতেই তিনি শুরু করেন বার্ষিক দৌড় প্রতিযোগিতা “মাইলস ফর মার্কাস”। এবারের আয়োজন ছিল তৃতীয়। শারীরিক সক্ষমতা ও মানসিক দৃঢ়তার পরীক্ষা নেওয়ার পাশাপাশি প্রধান লক্ষ্য ছিল ক্যানসার রোগীদের সহায়তার জন্য তহবিল গঠন।অ্যালিসন জানান, “আমি মিথ্যা বলব না, এটা ছিল ভয়ংকর কঠিন। গত সাত দিনে যে ব্যথা পেয়েছি, তা আগে কখনো অনুভব করিনি। তবে প্রতিদিন যখন হাল ছাড়ার মতো মনে হয়েছে, তখন বাবার কথা মনে পড়েছে। উনি চাইতেন আমি কখনো হাল না ছাড়ি।”

Manual5 Ad Code

এই দৌড় শুধু ব্যক্তিগত কৃতিত্ব নয়, বরং সমাজের জন্যও এক অবদান। ইনস্টাগ্রামের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত ১৪ হাজার ডলারেরও বেশি অর্থ সংগ্রহ করেছেন তিনি। এই অর্থ ব্রিটিশ কলাম্বিয়া ক্যানসার ফাউন্ডেশনের পেশেন্ট রিলিফ ফান্ডে দেওয়া হবে, যা ক্যানসার আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা ও জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহার করা হবে।অ্যালিসনের ভাষায়, “প্রতিবার ফোন হাতে নিলে নতুন নোটিফিকেশন পাই নতুন দানের খবর। এতে বোঝা যায়, মানুষের সহানুভূতি ও সমর্থন কতটা শক্তিশালী।”

Manual3 Ad Code

অ্যালিসনের এই যাত্রা শুধু সমাজের জন্যই নয়, তার ব্যক্তিগত জীবনের জন্যও ছিল বড় পরিবর্তনের প্রতিচ্ছবি। একসময় তার ওজন ছিল ৩০০ পাউন্ডেরও বেশি। স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়তে থাকায় তিনি দৌড়ানো শুরু করেন। প্রথমবার যখন আট কিলোমিটার দৌড়ান, তখন সেটি তার কাছে প্রায় অসম্ভব মনে হয়েছিল। অথচ আজ তিনি সাত দিনে ২৯৫ কিলোমিটার শেষ করেছেন—যা বিশ্বের অনেক পেশাদার রানারের পক্ষেও সহজ নয়।ম্যারাথনের নিয়ম অনুযায়ী প্রতিটি দৌড়ের দূরত্ব ৪২.২ কিলোমিটার। টানা সাত দিনে প্রতিদিন এতটা দৌড়ানো মানে শারীরিকভাবে বিশাল চাপ সামলানো। বিশেষজ্ঞদের মতে, এমন ধারাবাহিক দৌড় শেষ করতে কেবল পেশী শক্তিই নয়, প্রয়োজন মানসিক দৃঢ়তা, সঠিক খাদ্যাভ্যাস এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম।

নোয়াহ অ্যালিসনের এই উদ্যোগ কেবল একটি পরিবারকে নয়, পুরো সম্প্রদায়কে একত্র করেছে। স্থানীয় মানুষরা রাস্তায় দাঁড়িয়ে উল্লাস করেছেন, অনেকে কয়েক কিলোমিটার দৌড়ে যোগ দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হাজারো মানুষ শেয়ার করেছেন তার গল্প।অ্যালিসনের দৌড় প্রমাণ করেছে ব্যক্তিগত সীমাবদ্ধতা সঠিক উদ্দেশ্যের সামনে তুচ্ছ হয়ে যায়। তার ভাষায়, “আমার বাবা ছিলেন আমার নায়ক। তাকে স্মরণ করার সেরা উপায় হলো এমন কিছু করা, যা অন্যদের জীবনেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।”একজন মানুষের দৃঢ় সংকল্প কীভাবে হাজারো মানুষের আশা হয়ে উঠতে পারে, নোয়াহ অ্যালিসনের এই যাত্রা তার জীবন্ত উদাহরণ।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।
Manual1 Ad Code
Manual7 Ad Code