ডেস্ক রিপোর্ট : কানাডার ফেডারেল সরকার আগামী ১ অক্টোবর ২০২৫ থেকে ‘কানাডা গ্রিনার হোমস লোন’ কর্মসূচির জন্য নতুন আবেদন গ্রহণ বন্ধ করতে যাচ্ছে। জ্বালানি সাশ্রয়ী সংস্কার—যেমন উন্নত ইনসুলেশন, জানালার পরিবর্তন, হিট পাম্প স্থাপন_ উদ্দীপনায় চালু হওয়া এই কর্মসূচি বন্ধের ঘোষণা ইতিমধ্যে অংশগ্রহণকারী গৃহস্বামীদের কাছে ই–মেইলে জানানো হয়েছে। সরকার জানিয়েছে, কর্মসূচিটি “সফল” হলেও বরাদ্দকৃত তহবিল “শিগগিরই শেষ হয়ে যাবে।” ফলে নির্ধারিত সময়ের আগে আবেদন করলেও অনেকেই লোন পাবেন না।
২০২১ সালের মে মাসে চালু হওয়া এই কর্মসূচির আওতায় ৫,০০০ থেকে ৪০,০০০ ডলারের সুদমুক্ত ঋণ দেওয়া হয়েছে, যার জন্য সংস্কারের আগে ও পরে মূল্যায়ন বাধ্যতামূলক ছিল। এখন পর্যন্ত ১২০,০০০টির বেশি লোন অনুমোদিত হয়েছে, যার মোট পরিমাণ ২.৯ বিলিয়ন ডলার।এনার্জি থিংক-ট্যাংক ‘এফিশিয়েন্সি কানাডা’র নীতিকৌশল পরিচালক ব্রেন্ডান হ্যালি বলেন, “এভাবে হঠাৎ কর্মসূচি বন্ধ করা ব্যবসায়িক কার্যক্রমে বিঘœ ঘটায়, দক্ষ শ্রমিকদের চাকরি হারায় এবং ভোক্তাদের আস্থায় চরম আঘাত করে।”
তার মতে, এই লোন কর্মসূচি শুধু পরিবেশগত লক্ষ্য পূরণে নয়, বরং মধ্যবিত্তের জন্য জ্বালানি খরচ কমানো ও কর্মসংস্থান তৈরির ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ছিল।এর আগে সরকার ‘কানাডা গ্রিনার হোমস গ্রান্ট’ বন্ধ করে দেয়, যা সংস্কার খরচে সর্বোচ্চ ৫,০০০ ডলার অনুদান দিত। তখন বলা হয়েছিল, লোন কর্মসূচি চালু থাকবে। হ্যালি বলেন, “যদি লোনও বন্ধ হয়ে যায়, তাহলে মধ্যবিত্ত কানাডীয়দের জন্য আর কোনো ফেডারেল সমাধান থাকবে না।”সরকার জানিয়েছে, ‘কানাডা গ্রিনার অ্যাফোর্ডেবল হাউজিং’ ও ‘অয়েল টু হিট পাম্প অ্যাফোর্ডেবিলিটি’ কর্মসূচি চালু থাকবে। তবে এগুলো মূলত নি¤œআয়ের পরিবার ও নির্দিষ্ট আবাসন প্রকল্পের জন্য প্রযোজ্য।
অন্যদিকে, গ্রান্ট কর্মসূচির বিকল্প হিসেবে নতুন একটি উদ্যোগ চালু করা হয়েছে, যা বর্তমানে শুধু ম্যানিটোবায় সীমিতভাবে কার্যকর এবং নি¤œআয়ের পরিবারের জন্য প্রযোজ্য। ২০২৫ সালের ফেডারেল নির্বাচনে লিবারেল প্ল্যাটফর্মে হিট পাম্প ও জ্বালানি সাশ্রয়ী সংস্কার সহজ করার প্রতিশ্রুতি ছিল, বিশেষ করে নি¤œ ও মধ্যবিত্ত পরিবারের জন্য। এছাড়া বড় দূষণকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভোক্তাদের কার্বন ফুটপ্রিন্ট কমাতে সহায়তা করার সুযোগ তৈরির কথাও বলা হয়েছিল। তবে বাস্তবে কর্মসূচি বন্ধের এই সিদ্ধান্ত সেই প্রতিশ্রুতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। তারা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় দীর্ঘমেয়াদি নীতির ধারাবাহিকতা রক্ষা না হলে, ভোক্তা আস্থা ও পরিবেশগত লক্ষ্যÑ উভয়ই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।