ডেস্ক রিপোর্ট : দোহায় হামাস নেতাদের ওপর চালানো ইসরাইলি হামলায় এক কাতারি নাগরিক নিহত হওয়ার ঘটনায় দেশটির কাছে ক্ষমা চেয়েছেন ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে হোয়াইট হাউসে অনুষ্ঠিত বৈঠক চলাকালে কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান বিন জাসিম আল থানিকে দেওয়া এক ফোন কলে এই ক্ষমা প্রার্থনা করেন ইহুদিবাদী নেতানিয়াহু।তখন কাতারের প্রধানমন্ত্রীও এই ক্ষমা প্রার্থনা গ্রহণ করেন।
হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে বলা হয়—‘প্রথম ধাপে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু গভীর অনুশোচনা প্রকাশ করেন যে, কাতারে হামাসের লক্ষ্যবস্তুতে ইসরাইলের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অনিচ্ছাকৃতভাবে এক কাতারি সেনাসদস্য নিহত হয়েছেন। তিনি আরও দুঃখ প্রকাশ করেন যে, জিম্মি মুক্তি আলোচনার সময় হামাস নেতৃত্বকে লক্ষ্যবস্তু করার মাধ্যমে ইসরাইল কাতারের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করেছে। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন ভবিষ্যতে এ ধরনের হামলা আর চালানো হবে না।’
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘ফোনালাপের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি কাতারের বিরুদ্ধে আগ্রাসনের পুনরাবৃত্তি রোধে নিশ্চয়তা দিয়েছেন এবং কাতারের সঙ্গে প্রতিরক্ষা অংশীদারিত্বে যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন।’ মন্ত্রণালয় আরও জানায়, ‘ফোন কলে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী হামলার জন্য এবং কাতারের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করেন। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন ভবিষ্যতে আর কখনও কাতারের ভূখণ্ডকে লক্ষ্যবস্তু করা হবে না।’
নেতানিয়াহুর অফিসিয়াল এক্স অ্যাকাউন্টেও একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। এতে তিনি কাতারি প্রধানমন্ত্রীকে বলেন—‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আমি চাই আপনি জানুন যে আমাদের হামলায় আপনার এক নাগরিক নিহত হওয়ায় ইসরাইল অনুতপ্ত। আমি আপনাকে নিশ্চিত করতে চাই যে, ইসরাইল কাতারিদের নয় বরং হামাসকে লক্ষ্যবস্তু করেছিল। আমি আরও আশ্বস্ত করতে চাই যে, ভবিষ্যতে আপনার সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের কোনো পরিকল্পনা নেই ইসরাইলের। আমি প্রেসিডেন্টকে (ডোনাল্ড ট্রাম্প) সেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছি।’
৯ সেপ্টেম্বর ইসরাইলের ওই হামলায় অন্তত পাঁচজন নিম্নপদস্থ হামাস সদস্য এবং এক কাতারি নিরাপত্তা কর্মকর্তা নিহত হন। হামলাটি মূলত সিনিয়র হামাস নেতাদের লক্ষ্য করে চালানো হয়েছিল, যারা যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় যুক্ত ছিলেন। তবে শীর্ষ নেতারা এ হত্যাচেষ্টা থেকে বেঁচে যান।জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস দোহায় এই হামলাকে কাতারের সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতার ‘স্পষ্ট লঙ্ঘন’ বলে নিন্দা জানান। হামলার কয়েক দিন পর দোহায় প্রায় ৬০টি মুসলিম দেশ একত্র হয়ে কাতারের প্রতি সংহতি প্রকাশ করে।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।