লক্ষ্মীপুর নৌ-বন্দর কাজের অগ্রগতি নেই !  – BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, রাত ৮:৪৮, ৩১শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ


 

লক্ষ্মীপুর নৌ-বন্দর কাজের অগ্রগতি নেই ! 

প্রকাশিত নভেম্বর ১৫, ২০২০
লক্ষ্মীপুর নৌ-বন্দর কাজের অগ্রগতি নেই ! 

Manual3 Ad Code
তাবারক হোসেন আজাদ, লক্ষ্মীপুরঃ
ঘোষনার প্রায় চার বছর অতিবাহিত হলেও লক্ষ্মীপুরের মজুচৌধুরীর হাটে- নৌ-বন্দরের দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি নেই। ২০১৭ সালের ১৪ মার্চ মজুচৌধুরীরহাটে নৌ-বন্দর নির্মান প্রকল্পের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভূমি জরিপ ও অধিগ্রহনের জন্য সার্ভেয়ার নিয়োগ করা হলেও তারা এখনও কাজ শুরু করেনি বলে অভিযোগ রয়েছে। এ নৌ-বন্দর বাস্তবায়িত হলে ২১ জেলার মানুষের মধ্যে যোগাযোগের নতুন সেতুবন্ধন তৈরি হবে। তবে জেলা প্রশাসক বলছেন, প্রকল্পটি গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়েছে। নৌ-মন্ত্রনালয়ে প্রক্রিয়াধীন। ইতিমধ্যে ভূমি অধিগ্রহনের কাজ শুরু হয়েছে।
কাজের অগ্রগতি নেই যে কারণে:-
জানা যায়, লক্ষ্মীপুর শহর থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে মজুচৌধুরীর হাটের অবস্থান। এ মজুচৌধুরীরহাট লঞ্চঘাট থেকে বরিশাল, চট্রগ্রাম, সিলেট ও খুলনা বিভাগের ২১ জেলার মানুষ এ নৌ-রুট দিয়ে চলাচল করে আসছে। এখানে নৌ-বন্দর নির্মান করার জন্য দীর্ঘদিনের দাবী ছিল এ অঞ্চলের মানুষের। এ দাবীর প্রেক্ষিতে ২০১৭ সালের ১৪ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লক্ষ্মীপুরে এসে নৌ-বন্দর নির্মান প্রকল্পসহ বেশ কিছু কাজের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এর আগে একই বছরের ১২ জানুয়ারী নৌ-পরিবহন মন্ত্রনালয়ের টিএ শাখা রাষ্ট্রপ্রতির আদেশক্রমে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। কিন্তু ঘোষনার সাড়ে তিন বছর অতিবাহিত হলেও এখনো বন্দর নির্মানের কোন অগ্রগতি নেই।
অভিযোগ রয়েছে, লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসন ও চাঁদপুর বিআইডব্লিউটি এর যৌথ সার্ভে কমিটির সমন্বয়হীনতার কারনে প্রকল্পটির বাস্তবায়ন সংকট তৈরি হয়। এতে করে বন্দর নির্মান প্রকল্পটি নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন ব্যবসায়ীসহ সাধারনণ মানুষ। দ্রুত বন্দর বাস্তবায়ন চাই এ জেলাবাসী। নৌ-বন্দর বাস্তবায়নের দাবীতে বিক্ষোভ মিছিল ও মানবন্ধনসহ নানা কর্মসুচি পালন করে আসছে সর্বস্তরের মানুষ। এ দিকে একাধিকবার লক্ষ্মীপুর-মজুচৌধুরীরহাট লঞ্চঘাট থেকে ঢাকার সাথে লঞ্চ চলাচলের ঘোষনা দিয়েও এখন পর্যন্ত আলোরমুখ দেখেনি জেলাবাসী। এতে করে হতাশা বিরাজ করছে ব্যবসায়ীসহ সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে।
লক্ষ্মীপুর জেলার একাধিক ব্যবসায়ী জানান, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনার সাড়ে তিন বছর অতিবাহিত হলেও বন্দরের দৃশ্যমান কোন অগ্রগতি নেই। মজুচৌধূরীরহাটে নৌ-বন্দরটি বাস্তবায়িত হলে বরিশাল, চট্রগ্রাম, সিলেট ও খুলনা বিভাগের ২১ জেলার মানুষের মধ্যে যোগাযোগের নতুন সেতুবন্ধন তৈরি হবে। তৈরি হবে শিল্প কলকারখানার। দ্রুত প্রকল্পের নির্মান কাজ শুরু করার দাবী স্থানীয়দের।
জেলা বেসরকারী হাসপাতাল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক মো. কাউছার ও জেলা বনিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ জানান, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনার সাড়ে তিন বছর পার হলেও বন্দরের কোন অগ্রগতি নেই। এতে করে ব্যবসায়ীদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। দ্রুত বন্দর বাস্তবায়ন করার দাবী জানান তারা।
লক্ষ্মীপুর জেলা উন্নয়ন বাস্তবায়ন পরিষদের সদস্য সচিব হোসাইন আহমেদ হেলাল জানান. নৌ-বন্দর নির্মানের জন্য সরকারকে জমি দিতে প্রস্তুত। এখনো বন্দরের কোন অগ্রগতি না হওয়ায় হতাশার মধ্যে রয়েছে ব্যবসায়ী, সাধারণ মানুষ। সরকার নদী বন্দরের যে উদ্যোগ নিয়েছে, এটি দ্রুত বাস্তাবয়ন হলে এ বন্দর হবে ব্যবসার প্রান কেন্দ্র। প্রসার ঘটবে লাখ লাখ মানুষের অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের। সৃষ্টি হবে কর্মসংস্থানের। কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হবে।
চাঁদপুর বিআইডাব্লিউটিএ উপ-পরিচালক একেএম কাইছারুল ইসলাম জানান, মজুচৌধুরীরঘাটের ইজারা নিয়ে আইনী জটিলতা, দ্বৈত প্রশাসনের সমন্বয়হীনতার কারনে আটকে আছে নৌ-বন্দরের সার্ভের কাজ। এ দাপ্তরিক জটিলতা নিষ্পত্তি না হলে বন্দরের সার্ভের কাজ কোনভাবে শুরু যাচ্ছেনা। পাশাপাশি জমি অধিগ্রহন,সীমানা নির্ধারনসহ বন্দরের উন্নয়নমূলক কাজ পুরোপুরি বিআইডাব্লিউটিএর কাছে হস্তান্তর না হওয়ায় কাজের ধীরগতি বলে জানান তিনি। তারপরও যত তাড়াতাড়ি সম্ভব জমি অধিগ্রহন ও সার্ভের কাজ শুরু করার আশ্বাস দেন তিনি।
এবিষয়ে লক্ষ্মীপুরের জেলা প্রশাসক অঞ্জন চন্দ্র পাল সাংবাদিকদের জানান, প্রকল্পটি নৌ-মন্ত্রনালয়ে প্রক্রিয়াধীন। প্রকল্পটি গেজেট আকারে প্রকাশিত হয়েছে। ইতিমধ্যে ভূমি অধিগ্রহনের কাজ শুরু হয়েছে। আশা করি খুব অল্প সময়ের মধ্যে নৌ-বন্দরের কাজ শুরু হবে।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।
Manual1 Ad Code
Manual2 Ad Code