লন্ডনে অভিবাসনবিরোধী বিক্ষোভে সহিংসতা – BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, বিকাল ৪:০৯, ১লা নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ


 

লন্ডনে অভিবাসনবিরোধী বিক্ষোভে সহিংসতা

newsup
প্রকাশিত সেপ্টেম্বর ১৪, ২০২৫
লন্ডনে অভিবাসনবিরোধী বিক্ষোভে সহিংসতা

Manual2 Ad Code

ডেস্ক রিপোর্ট

যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে অভিবাসনবিরোধী বিক্ষোভে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়েছে। এতে আহত হয়েছেন ২৬ পুলিশ সদস্য। অভিবাসনবিরোধী এক বিশাল বিক্ষোভে যোগ দিয়েছেন এক লাখ দশ হাজারেরও বেশি মানুষ। মেট্রোপলিটন পুলিশ জানিয়েছে, ডানপন্থি টমি রবিনসনের উদ্যোগে আয়োজিত ‌‘ইউনাইট দ্য কিংডম’-এর এই সমাবেশে এক লাখ দশ হাজার থেকে দেড় লাখ পর্যন্ত মানুষ অংশ নেন, যা ধারণার চেয়েও অনেক বেশি। খবর আল জাজিরার।

ডানপন্থি বিক্ষোভকারীদের সেন্ট্রাল লন্ডনের হোয়াইট হলে জমায়েত হওয়া প্রায় পাঁচ হাজার বিক্ষোভকারীর অপর একটি দলের কাছ থেকে আলাদা রাখতে পুলিশকে বেশ কষ্ট করতে হয়েছে।

Manual7 Ad Code

সহিংসতায় চার পুলিশ কর্মকর্তার দাঁত ভেঙে গেছে, কারও নাক ভেঙেছে, মাথায় আঘাত লেগেছে, কারও মেরুদণ্ডে আঘাত লেগেছে, আবার কেউ মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন। পুলিশ জানায়, কমপক্ষে ২৫ জনকে আটক করা হয়েছে এবং এ সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

পুলিশের সহকারী কমিশনার ম্যাট টুইস্ট বলেন, অনেকেই আইন মেনেই বিক্ষোভে অংশ নিয়েছেন, কিন্তু অনেকেই সহিংসতার উদ্দেশ্যে হাজির হয়েছেন। তারা পুলিশের ওপর শারীরিক ও মৌখিক হামলা চালিয়েছে এবং নিরাপত্তা কর্ডন ভেঙে ফেলার চেষ্টা করেছে।

Manual5 Ad Code

হোম সেক্রেটারি শাবানা মাহমুদ হামলাকারীদের নিন্দা জানিয়ে বলেন, যে কেউ অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকলে তাকে আইনের সর্বোচ্চ শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।

এই বিক্ষোভকে ‌‘অভূতপূর্ব দেশপ্রেমিক একতার প্রদর্শনী’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন টমি রবিনসন (প্রকৃত নাম স্টিফেন ইয়াক্সলি-লেনন)। তিনি সমর্থকদের উদ্দেশে বলেন, আজই গ্রেট ব্রিটেনে এক সাংস্কৃতিক বিপ্লবের সূচনা। এটাই আমাদের মুহূর্ত।

বিক্ষোভকারীরা যুক্তরাজ্যের ইউনিয়ন পতাকা, ইংল্যান্ডের সেন্ট জর্জ ক্রস, এমনকি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের পতাকাও বহন করেন। অনেকের মাথায় ছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিখ্যাত ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ টুপি। তারা প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছিলেন। সে সময় ‘ওদের বাড়ি পাঠাও’ লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে ছিল তাদের।

ইভেন্টে ভিডিও বার্তা দেন মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্ক, ফরাসি ডানপন্থি রাজনীতিক এরিক জেমুর এবং অভিবাসন বিরোধী অল্টারনেটিভ ফর জার্মানি (এএফডি) পার্টির পেত্র বিস্ট্রন। মাস্ক বলেন, ব্রিটেনের মধ্যে কিছু বিশেষত্ব আছে, কিন্তু আমি দেখছি তা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। অনিয়ন্ত্রিত অভিবাসন ব্রিটেনকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

জেমুর তার বক্তব্যে বিতর্কিত ‘গ্রেট রিপ্লেসমেন্ট’ ষড়যন্ত্র তত্ত্ব পুনরাবৃত্তি করেন, যেখানে বলা হয় যে সাদা ইউরোপীয়দের জায়গায় সচেতনভাবে অভিবাসীদের বসানো হচ্ছে।

একই দিনে ‘স্ট্যান্ড আপ টু রেসিজম’ প্রচারণা দলের উদ্যোগে পাল্টা বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। বামপন্থি এমপি জাহরা সুলতানা ও ডায়ান অ্যাবট এতে যোগ দেন। তারা ‘শরণার্থীদের স্বাগত জানাও’ এবং ও ‘ফার-রাইটকে রুখে দাঁড়াও’ লেখা পোস্টার বহন করছিলেন।

অ্যাবট বলেন, রবিনসন ও তার সহযোগীরা যে ভয় ছড়াচ্ছেন তা মিথ্যা এবং বিপজ্জনক। আমাদের আশ্রয়প্রার্থীদের পাশে থাকতে হবে এবং ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। পুলিশ জানায়, দুই পক্ষকে আলাদা রাখতে দেড় হাজারের বেশি কর্মকর্তা মোতায়েন করা হয়েছিল।

Manual8 Ad Code

লিবারেল ডেমোক্র্যাট নেতা এড ডেভি সামাজিক মাধ্যমে সহিংসতা ও ইলন মাস্কের বক্তব্যের সমালোচনা করে বলেন, এই ডানপন্থি গোষ্ঠীগুলো ব্রিটেনের প্রতিনিধিত্ব করে না।

Manual8 Ad Code

সাম্প্রতিক জরিপে দেখা যাচ্ছে, অভিবাসনবিরোধী রিফর্ম ইউকে দলটি জনপ্রিয়তায় বড় দলগুলোকে টপকে যাচ্ছে। যদিও দলটি টমি রবিনসনের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্ক এড়িয়ে চলছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, এই শোভাযাত্রা আধুনিক ব্রিটেনে অন্যতম বড় ডানপন্থি সমাবেশ। কিংস কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক জর্জিওস সামারাস বলেন, এখানে ডানপন্থি বিভিন্ন গোষ্ঠী এবং নতুন সমর্থকরা একত্রিত হয়েছেন।

যদিও এই বিক্ষোভে বিপুল সমাগম হয়েছে। তবে তা ২০২৩ সালের নভেম্বরের প্রো-প্যালেস্টাইন বিক্ষোভের চেয়ে অনেক ছোট ছিল, সে সময় বিক্ষোভে প্রায় তিন লাখ মানুষ অংশ নিয়েছিল।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।
Manual1 Ad Code
Manual5 Ad Code