ডেস্ক রিপোর্ট : যুক্তরাষ্ট্রের সাউদার্ন আরকানসাস ইউনিভার্সিটি থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে মাস্টার্স করা মো: তারিকুজ্জামান নিজের মেধা ও কঠোর পরিশ্রমে বিশ্বজোড়া স্বীকৃতি অর্জন করেছেন। তিনি প্রতিষ্ঠা করেছেন রেন্টিয়ার্ড (RentYard)—একটি আধুনিক ভাড়াবাড়ি প্ল্যাটফর্ম, যা আমেরিকায় শিক্ষার্থী, পেশাজীবী ও অভিবাসীদের জন্য বাড়ি খোঁজা ও ভাড়া নেওয়াকে সহজ করে তুলছে।মাত্র এক বছরের মধ্যে রেন্টিয়ার্ডের বাজারমূল্য দাঁড়ায় ১ মিলিয়ন ডলার, যা তারিকুজ্জামানের সফটওয়্যার ডেভেলপার এবং উদ্যোক্তা হিসেবে অসাধারণ দক্ষতার প্রমাণ বহন করে।
যুক্তরাষ্ট্রে নতুন আগতদের সবচেয়ে বড় সমস্যাগুলোর একটি হলো—রেন্টাল হিস্ট্রি, স্থানীয় গ্যারান্টর কিংবা জটিল লিজ পেপারওয়ার্ক ছাড়া নিরাপদ ও সাশ্রয়ী বাসস্থান পাওয়া। রেন্টিয়ার্ড এসব বাধা দূর করে ব্যবহারকারীদের এমনকি বিদেশ থেকেই আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ভাড়া নেওয়ার সুযোগ দিচ্ছে। গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, এই প্ল্যাটফর্ম শুধুমাত্র আইনসম্মতভাবে আগতদের সহায়তা করে, যাতে সবার জন্য একটি নিরাপদ ও টেকসই ভবিষ্যৎ গড়া যায়।
তারিকুজ্জামান বলেন, “আমার নিজের অভিজ্ঞতাই আমাকে রেন্টিয়ার্ড তৈরি করতে অনুপ্রাণিত করেছে। আমি চেয়েছি এমন একটি প্ল্যাটফর্ম বানাতে, যেখানে ভাড়া নেওয়া হবে সবার জন্য নিরাপদ, স্বচ্ছ ও সহজ।”তার উদ্ভাবনী উদ্যোগ ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক ইভেন্টগুলোতে আলোচনায় এসেছে, যেমন ওয়েব সামিট কানাডা, স্মল বিজনেস এক্সপো (ডালাস, টেক্সাস) এবং গ্লোবাল এন্ট্রাপ্রেনারশিপ উইক (ফোর্ট ওয়ার্থ)। ২০২৪ সালে তিনি নির্বাচিত হন আমেরিকার ডালাস টেক্সাস, শীর্ষ ১০০ ক্ষুদ্র ব্যবসা উদ্ভাবক দের একজন হিসেবে—যেখানে তিনি উদ্যোক্তাদের শীর্ষ ৫% এর মধ্যে স্থান পান।
২০২৫ সালে তার নেতৃত্ব ও প্রভাব তাকে এনে দিয়েছে একাধিক মর্যাদাপূর্ণ পুরস্কারের মনোনয়ন—যার মধ্যে রয়েছে স্টার্টআপ কোম্পানি সিইও টেক টাইটান্স অ্যাওয়ার্ড, ভেঞ্চার ডালাস স্টার্টআপ অব দ্য ইয়ার অ্যাওয়ার্ড, এবং সোশ্যাল ইমপ্যাক্ট চ্যাম্পিয়ন অ্যাওয়ার্ড (ডালাস এন্ট্রাপ্রেনার সেন্টার)।
উদ্যোক্তা হিসেবে সাফল্যের বাইরেও তারিকুজ্জামান যুক্তরাষ্ট্রের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমে অবদান রেখে চলেছেন। তিনি Eagle Venture Lab-এর পিচ প্রতিযোগিতার বিচারক, প্যানেলিস্ট এবং ডালাস–ফোর্ট ওয়ার্থ এলাকায় স্টার্টআপ মেন্টর হিসেবে কাজ করছেন, যেখানে তিনি নতুন প্রজন্মের উদ্যোক্তাদের অনুপ্রাণিত ও সহায়তা করছেন।রেন্টিয়ার্ড ইতোমধ্যেই বাংলাদেশি হাউজিং মার্কেটে প্রবেশ করেছে এবং ২০৩০ সালের মধ্যে আরও বিভিন্ন দেশে সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে। তারিকুজ্জামানের স্বপ্ন হলো একটি গ্লোবাল ক্রস-বর্ডার রেন্টাল সল্যুশন তৈরি করা, যা পৃথিবীর লাখো মানুষের জন্য ভাড়া নেওয়াকে সহজ করবে।একজন আন্তর্জাতিক শিক্ষার্থী থেকে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত উদ্যোক্তা হয়ে ওঠার এই যাত্রা প্রমাণ করে—দৃঢ়সংকল্প, দৃষ্টি ও সৃজনশীলতা শুধু সমস্যার সমাধানই আনে না, বরং শিল্পখাতকেও নতুনভাবে গড়ে তুলতে সক্ষম।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।