এমদাদুর রহমান চৌধুরী জিয়া
সিলেটের সাদাপাথর কাণ্ডে অভিযুক্ত যে সমস্ত লুটেরাজদের রাজা তাদের মধ্যে অন্যতম প্রভাবশালী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল অদুদ আলফু। অবৈধ ভাবে, বালুসহখনিজ সম্পদ চোরাই পথে লুট করে বিক্রি করা। সীমান্ত পথের মাদক হার্টের নিয়ন্ত্রণ করা থেকে শুরু করে , প্রবাসে নারী পাচার ও সিলেট শহরের আবাসিক বোর্ডিং গুলোতে দেহ ব্যবসায় নারী সাপ্লাই পর্যন্ত রয়েছে তার নেটওয়ার্ক।
আবাসিক বোর্ডিং পাড়ায় আলফু চেয়ারম্যানের নারী লোভীএবং ইয়াবা সেবন কারী হিসেবে রয়েছে ব্যাপক পরিচিতি।
দেশি-বিদেশি পর্যটকদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্র এর সাদাপাথর লুটপাটের অন্যতম হোতা কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও তেলিখাল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কাজী আব্দুল অদুদ ওরফে আলফু মিয়া। অবশেষে পুলিশ তাকে খাঁচায় বন্দি করেছে নানা কৌশল অ্যাপ্লাই করে।
গতকাল রবিবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে তিন মামলায় আটক দেখিয়ে প্রভাবশালী ইউপি চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল অদুদ আলফু কে বলে নিশ্চিত করেছেন সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার এর জেলার তরিকুল ইসলাম।
তাকে শনিবার বিকেলে গ্রেফতার করেছে কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের একটি দল বলে জানিয়েছেন কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ রতন শেখ।
এই সেই আলফু পাথর কাণ্ডে দুদকের দেয়া প্রতিবেদনে যার নাম রয়েছে তালিকায় ২৬ নম্বরে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রতন শেখ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ।চেয়ারম্যান আলফুর বিরুদ্ধে হত্যা, চাঁদাবাজিসহ ১৭টি মামলা রয়েছে। তাকে ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। আদালতের দেয়া তারিখে তা শুনানি হবে।
পুলিশ জানায়, আলফু মিয়ার বিরুদ্ধে ৫ আগস্টের আগে ও পরে হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। এর মধ্যে ৫ আগস্টের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার অভিযোগে দুটি মামলা রয়েছে। এসব মামলা সত্ত্বেও আলফু মিয়া স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের দাপটে চলাচল করতেন। সাদাপাথর লুটের প্রেক্ষাপট হিসেবে ধরা হয়, সাদাপাথরমুখী ধলাই নদীর থেকে বালু উত্তোলন। আলফু মিয়া তার একটি ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট দিয়ে ভোলাগঞ্জ বালুমহাল ইজারা নিয়ে ধলাই নদীর সাদাপাথরের মুখ অনেকটা দখল করে রাখেন। এ নিয়ে ধলাই নদী এলাকায় এলাকবাসী প্রতিবাদ কর্মসূচিও পালন করেন। কিন্তু আলফু ইউপি চেয়ারম্যানের দাপটে যত্রতত্র বালু উত্তোলন শুরু করলে সাদাপাথর পর্যটন এলাকায়ও লুটপাট শুরু হয়।
আরও জানা গেছে, আলফু মিয়া রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের আগে একচেটিয়াভাবে বালু ও পাথরের অবৈধ উত্তোলন নিয়ন্ত্রণ করতেন। ৫ আগস্টের পর বিএনপির একটি অংশকে নিয়ে নতুন একটি চক্র ভোলাগঞ্জে সক্রিয় হয়ে উঠেছিল।
সাদাপাথর লুটকাণ্ডের আগে র্যাবের হাতে গ্রেফতার হওয়া ও দুদকের তালিকায় থাকা বিএনপির উপজেলা সভাপতির পদ হারানো নেতা সাহাব উদ্দিনের সঙ্গে আলফু মিয়ার রয়েছে সখ্যতা।
সাহাব উদ্দিনকে গত ১৩ সেপ্টেম্বর রাতে সিলেট নগরীর কুমারপাড়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৯)। পরে ওই রাতেই তাকে সিলেট কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করা হয়। তার বিরুদ্ধে আলোচিত সাদা পাথর লুট ছাড়াও সাতটি মামলা রয়েছে। এসব অভিযোগের প্রেক্ষিতে বিএনপি কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে ১১ আগস্ট এক বিজ্ঞপ্তিতে সাহাব উদ্দিনের বিএনপির সব পদ স্থগিত করা হয়।
উল্লেখ্য, পাথর কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া আলফু স্থানীয় আওয়ামী লীগ পরিবারে সমালোচিত নিন্দিত এবং তার অপরাধ কর্মকাণ্ডের অন্যতম সহযোগী পার্টনার সাহাব উদ্দিন বিএনপি পরিবার থেকে বহিষ্কারকৃত।
নতুন প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি করে বাংলাদেশ এগিয়ে নেওয়ার স্বপ্ন বাস্তবায়নে লুটেরাজ মুক্ত রাজনীতি চায় দেশবাসী এমনটাই দাবি করছে সচেতন সমাজপতি ও রাজনীতিবিদরা।
এর জন্যই রাজনৈতিক সংস্কার চায় তারা বলে দাবি অনেকের।
বৈষম্যহীন বাংলাদেশ তৈরি করতে অপরাধীদের তালিকা প্রণয়ন করে রাজনৈতিক চিন্তা চেতনার ঊর্ধ্বে উঠে আইনের সঠিক প্রয়োগ প্রয়োজন বলে দাবি করছেন বিশ্লেষকরা।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।