রমজানের শেষ দশক – BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, বিকাল ৩:৪৬, ১১ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ


 

রমজানের শেষ দশক

newsup
প্রকাশিত এপ্রিল ১৯, ২০২৩
রমজানের শেষ দশক

Manual3 Ad Code

ডেস্ক নিউজ: আরবি ১২ মাসের নবম মাস পবিত্র রমজান। মহিমান্বিত এই মাসের সর্বাধিক ফজিলতপূর্ণ অংশ হচ্ছে শেষ দশক। রমজান মাসের শ্রেষ্ঠত্বের অন্যতম একটি কারণ এ মাসে আল্লাহ তাআলা কোরআনুল কারিম নাজিল করেছেন।

আল্লাহ কোরআনে বলেছেন, রমজান তো সেই বরকতময় মাস, যে মাসে নাজিল করা হয়েছে কোরআন, মানুষের হেদায়েতের জন্য এবং হেদায়েত ও হক বাতিলের পার্থক্যের সুস্পষ্ট প্রমাণ স্বরূপ। (সুরা বাকারা: ১৪৫)

পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের আবশ্যকীয় ইবাদত। সময়মতো নামাজ পড়াও একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত।কিন্তু সারা বছর ব্যাপী নামাজের সময় এক থাকেনা। নগদ ইসলামিক অ্যাপে ইবাদত প্রতিদিন ফিচারে রয়েছে নামাজের সময়সূচি। যেকোন সময় নামাজের সময়সূচি দেখে নিয়ে নামাজ আদায় করুন সময়মতো।

এই আয়াতে রমজানে কোরআন নাজিল হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু কোরআন কি পুরো রমজান মাসজুড়ে নাজিল হয়েছে? এ প্রশ্নের জবাব পাওয়া যায় সুরায়ে দুখানের ৩ নম্বর আয়াতে। সেখানে আল্লাহ তাআলা বলেন, আমি এই কোরআন নাজিল করেছি এক বরকতময় রাতে। নিশ্চই আমি সতর্ককারী। (সুরা দুখান: ৩)

এ আয়াত থেকে বোঝা যায়, কোরআন লাওহে মাহফুজ থেকে দুনিয়ার আকাশে বায়তুল ইজ্জত নামক স্থানে এক রাতে নাজিল হয়েছে। কিন্তু এ বরকতময় রাতের পরিচয় এই আয়াতে দেওয়া হয়নি। সুরায়ে কদরে আল্লাহ তাআলা বলেন, আমি একে (কোরআন) নাজিল করেছি কদরের রাতে। (সুরা কদর: ১)

এই আয়াতে বরকতময় রাতের পরিচয় পাওয়া যায়। সেই রাতের নাম লায়লাতুল কদর। কদরের রাতেই আল্লাহ তাআলা লাওহে মাহফুজ থেকে দুনিয়ার আকাশে সমগ্র কুরআন একসাথে নাজিল করেছেন। আবার বিশুদ্ধতম মতানুসারে, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর কোরআন নাজিলের সূচনাও হয়েছিল এ রাতেই। আল্লাহ তাআলা কদরের রাত কোনটি সেকথা নির্দিষ্ট করে বলে দেননি। তবে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, রমজানের শেষ দশকের বেজোড় রাতগুলোতে তোমরা লায়লাতুল কদর তালাশ করো। (বুখারি: ২০২১)

Manual8 Ad Code

লায়লাতুল কদরের ফজিলত বর্ণনা করে স্বয়ং আল্লাহ তাআলা বলেন, লায়লাতুল কদর হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। (সুরা কদর: ৩)

রমজানের শেষ দশকটি এমন বরকতপূর্ণ রাত সম্বলিত হওয়ায় এটি রমজানের শ্রেষ্ঠতম অংশ।

শেষ দশকে করণীয়

১। ইতিকাফ করা : রোজা পালনের পাশাপাশি এ দশকের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি আমল হচ্ছে ইতেকাফ। ২০ রমজানের সূর্যাস্তের পূর্ব থেকে শাওয়ালের চাঁদ ওঠার পূর্ব পর্যন্ত ইতেকাফের নিয়তসহ মসজিদে নিরবচ্ছিন্ন অবস্থানকে ইতেকাফ বলে। হুকুমগত দিক থেকে এটি সুন্নতে মুআক্কাদায়ে কেফায়া। মসজিদের মহল্লাবাসীদের মধ্য থেকে কেউ আদায় করে নিলে সবাই দায়মুক্ত হয়ে যাবে। কেউই আদায় না করলে সবাই গোনাহগার হবে।

Manual3 Ad Code

ইতেকাফ অত্যন্ত ফজিলতপূর্ণ একটি সুন্নত। আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ দশকে সর্বদাই ইতেকাফ করেছেন। রাসুলের ইন্তেকালের পর তাঁর সম্মানিত স্ত্রীরাও ইতেকাফ করেছেন। লায়লাতুল কদরের ফজিলত প্রাপ্তির জন্য ইতেকাফ করাটা অত্যন্ত উপযোগী একটি আমল।

Manual8 Ad Code

২। পরিবার সমেত শবগুজারি করা: এ দশদিন রাত জেগে বেশি বেশি নামাজ ও অন্যান্য ইবাদত বন্দেগিতে লিপ্ত থাকা সুন্নত। আম্মাজান আয়েশা (রা.) বলেন, যখন রমজান শেষ দশকে প্রবেশ করতো, তখন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজে জাগতেন, পরিবার-পরিজনদেরকেও জাগাতেন। কঠোর পরিশ্রম করতেন এবং (শরীরে শক্তি সঞ্চারের জন্য) কোমরে লুঙ্গি বেঁধে নিতেন। (মুসলিম: ১১৭৪)

৩। দুআ ও দরূদ: কোরআন-সুন্নায় বর্ণিত দুআ, দরূদ ও ইস্তেগফারগুলো বেশি বেশি পাঠ করতে থাকা। যেহেতু এই দশকের যেকোনও রাত্রি শবে কদর হতে পারে, তাই রাতগুলো ইবাদত, জিকির, তাসবিহ-তাহলিলের মাধ্যমে কাটানোর চেষ্টা করা। আম্মাজান আয়েশা (রা.) বলেন, আমি জিজ্ঞাসা করলাম, হে আল্লাহর রাসুল, আমি যদি শবে কদর পাই তাহলে কী দুআ করবো? রাসুল বললেন, তুমি বলবে: (اللَّهمَّ إنَّك عفُوٌّ تُحِبُّ العفْوَ، فاعْفُ عنِّي) হে আল্লাহ আপনি ক্ষমাকারী, ক্ষমা করতে ভালোবাসেন। আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন। (তিরমিজি : ৩৫১৩)

অতএব সম্ভব হলে রাতেরবেলা উল্লিখিত দুআটি বেশি বেশি পড়বে।

Manual7 Ad Code

৪। ঝগড়া-বিবাদ থেকে বিরত থাকা: ঝগড়া-বিবাদ ও বাগবিতণ্ডা থেকে সম্পূর্ণ বিরত থাকা। বর্ণিত আছে, আল্লাহর পক্ষ থেকে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে শবে কদরের সুনির্দিষ্ট তারিখ জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সাহাবায়ে কেরামকে রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তারিখটি বলতে যাবেন সেই মূহুর্তে দুই ব্যক্তিকে ঝগড়া করতে দেখেন। তাদের এ ঝগড়ার বে-বরকতির কারণে রাসুলকে তারিখটি ভুলিয়ে দেওয়া হয়েছে।

৫। জাকাত ও সদকাতুল ফিতর আদায় করা: নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হলে রমজান শেষ হওয়ার পূর্বেই জাকাত ও সদকাতুল ফিতর দিয়ে দেওয়া উত্তম। এর দ্বারা ফরজ এবং ওয়াজিবের জিম্মাদারি আদায় হওয়ার পাশাপাশি সাতশো গুণ বেশি সাওয়াব পাওয়া যায়।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।
Manual1 Ad Code
Manual5 Ad Code