কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার গ্রামীণ কাঁচা সড়কের বেহাল দশায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন তিন লাখেরও বেশি মানুষ। খানাখন্দ ও কর্দমাক্ত রাস্তায় প্রতিদিন হাজারো মানুষকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। সামান্য বৃষ্টিতেই এসব সড়ক পরিণত হয় জলাশয়ে, যার কারণে দুর্ঘটনা ঘটছে প্রায়ই। এলাকাবাসীর অভিযোগ, বিষয়টি বারবার সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও কার্যকর উদ্যোগ এখনো নেওয়া হয়নি।
সড়কজুড়ে জলাবদ্ধতা ও কাদামাটি
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) সরজমিনে দেখা যায়, উপজেলার ৫নং সদর ইউনিয়নের উত্তর বালিগাঁও–বাগমারা সংযোগ সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে অবহেলায় পড়ে আছে। সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কজুড়ে জমে থাকে পানি। কোথাও সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত, আবার কোথাও জমে থাকা পানিতে রাস্তা ডুবে থাকে। ফলে শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে কর্মজীবী মানুষ সবাই পড়ছেন দুর্ভোগে। বিশেষ করে স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীদের যাতায়াতে বিড়ম্বনার শেষ নেই।
এলাকাবাসীর ক্ষোভ
স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল কাইয়ুম কামরুল ও শরিফ মিয়া বলেন,
“দীর্ঘদিন ধরে এই কাঁচা রাস্তা দিয়ে চলাচল করছি। বর্ষাকালে রাস্তা একেবারে অচল হয়ে পড়ে। অসুস্থ রোগীকে হাসপাতালে নিতে হয় কোলে করে। চেয়ারম্যান-মেম্বারদের কাছে বহুবার আবেদন জানালেও এখনো কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।”
একজন স্থানীয় শিক্ষক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,
“বৃষ্টি হলে রাস্তা পানির নিচে ডুবে যায়। পানি সরে গেলে রাস্তায় কাদামাটি জমে থাকে। শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন চরম কষ্টে যাতায়াত করে।”
জনপ্রতিনিধি ও কর্মকর্তাদের বক্তব্য
স্থানীয় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আমিনা বেগম বলেন,
“এলাকার মানুষকে নিয়ে আমি নিজেও বিপাকে আছি। বর্ষায় রাস্তাটি একেবারে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ে। বারবার সংশ্লিষ্ট দপ্তরে জানিয়েছি, আশা করছি শিগগিরই উন্নয়ন কাজ শুরু হবে।”
কমলগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) প্লাবন পাল জানান,
“রাস্তাটি সংস্কারের জন্য প্রস্তাব তৈরি করা হচ্ছে। বরাদ্দ এলে দ্রুত কাজ শুরু করা হবে।”
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. আব্দুর রকিব বলেন,
“গ্রামীণ সড়ক উন্নয়নের জন্য আমরা নিয়মিত কাজ করছি। এ রাস্তার বিষয়টি তালিকাভুক্ত রয়েছে। ধাপে ধাপে সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে। বরাদ্দ পাওয়া সাপেক্ষে রাস্তা পাকা করা হবে।”
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মাখন চন্দ্র সূত্রধর বলেন,
“এলাকার জনগণের দুর্ভোগের বিষয়টি আমরা অবগত আছি। ইতিমধ্যেই বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
এলাকাবাসীর প্রত্যাশা
দীর্ঘদিনের অবহেলায় পড়ে থাকা এই সড়কের দ্রুত সংস্কার ও পাকা করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তাদের আশা, খুব শিগগিরই কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে দুর্ভোগ লাঘব করবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।