স্টাফ রিপোর্টার
ডিজিটাল যুগে মোবাইল ফোন কেবল যোগাযোগের মাধ্যম নয়, এটি শিক্ষার ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তবে একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মোবাইল আসক্তি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বাড়তি ব্যবহার, গেমস ও বিভিন্ন বিনোদনমূলক অ্যাপ শিক্ষার্থীদের পড়াশোনা থেকে মনোযোগ সরিয়ে নিচ্ছে—এমন অভিযোগ অভিভাবক, শিক্ষক এমনকি প্রশাসনের পক্ষ থেকেও দীর্ঘদিন ধরে উঠে আসছে।
এই প্রেক্ষাপটে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলায় প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যন্ত সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফোন ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
সিদ্ধান্তের আওতায় কারা থাকবেন-
প্রথম শ্রেণি থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা এ সিদ্ধান্তের আওতাভুক্ত থাকবেন। উপজেলার সরকারি-বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মাধ্যমিক বিদ্যালয়, কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এবতেদায়ী ও দাখিল মাদরাসা—সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই এই নিয়ম কার্যকর হবে।
সভায় কারা ছিলেন-
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কামরুল হাসান মারুফের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় উপস্থিত ছিলেন কিশোরগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন, উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. নাজমুল করিম, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জয়নুল আলম তালুকদার, উপজেলা সমাজসেবা অফিসার মুহাম্মদ মঈনুর রহমান মনিরসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও স্থানীয় গণমাধ্যম প্রতিনিধিরা।
সভায় কিশোরগঞ্জ প্রেসক্লাবের প্রতিনিধি আমিনুল হক সাদী শিক্ষার্থীদের মোবাইল আসক্তি থেকে রক্ষা করতে প্রতিষ্ঠানে মোবাইল নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব দেন। প্রস্তাবের প্রতি সবাই একমত পোষণ করেন।
ইউএনওর বক্তব্য-
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. কামরুল হাসান মারুফ বলেন, “শিক্ষার্থীরা যেন মোবাইল আসক্তি থেকে মুক্ত থেকে নিয়মিত পড়াশোনায় মনোযোগ দিতে পারে, সেটাই আমাদের মূল লক্ষ্য। তাই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অভিভাবক ও শিক্ষকরা সচেতন থাকলে এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন সহজ হবে।”
তিনি আরও জানান, উপজেলা প্রশাসন এ বিষয়ে নিয়মিত নজরদারি করবে এবং প্রয়োজনে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
প্রশাসনের আরও কার্যক্রম-
একই দিনে উপজেলা পরিষদের হল রুমে কৃষি, এনজিও সমন্বয়, সন্ত্রাস-নাশকতা প্রতিরোধ, চোরাচালান প্রতিরোধ, নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণসহ একাধিক কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিভাগীয় কর্মকর্তা, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রধান, এনজিও প্রতিনিধি ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের জন্য উদ্যোগ-
শিক্ষার্থীদের সুস্থ বিকাশ এবং নিয়মিত পড়াশোনায় মনোযোগী করতে এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানায় প্রশাসন। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, পরিবার ও বিদ্যালয়ের সম্মিলিত সচেতনতাই কেবল এ উদ্যোগকে সফল করতে পারে।
সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।