প্রশ্ন করার জন্য সাংবাদিকদের চাকরি যায়, এই বিচার কার কাছে দেব
০৪ মে ২০২৫, ০৮:২৮ পূর্বাহ্ণ

ঢাকা ডেস্ক
দৈনিক মানবজমিনের প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী বলেছেন, প্রশ্ন করার জন্য সাংবাদিকের চাকরি যায়- এমন দেশে মুক্ত গণমাধ্যম দিবস পালন করছি। যে দেশে প্রশ্ন করার জন্য সাংবাদিকের চাকরি যায়, সে দেশে আমরা মুক্ত গণমাধ্যম দিবস পালন করছি। এর দায় সরকারকে দেব নাকি নাকি আর কাকে দেব জানি না।
রোববার (৪ মে) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস-২০২৫ উপলক্ষে সম্পাদক পরিষদের উদ্যোগে আয়োজিত আলোচনা সভায় এ মন্তব্য করেন তিনি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও দ্য ডেইলি স্টারের সম্পাদক মাহফুজ আনাম। সভা সঞ্চালনা করেন সম্পাদক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ও বণিক বার্তার সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদ।
সম্পাদক পরিষদের কোষাধ্যক্ষ মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন, ‘গণমাধ্যম ছাড়া গণতন্ত্র চর্চা সম্ভব নয়। আমাদের কথা বলতে দিতে হবে, লিখতে দিতে হবে, প্রশ্ন করতে দিতে হবে। তাহলেই গণমাধ্যম মুক্তির স্বাদ পাবে।’
সূচনা বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সহসভাপতি নিউ এজ সম্পাদক নুরুল কবির বলেন, সারাবিশ্বে যখন ঘটা করে গণমাধ্যম মুক্ত দিবস পালন করতে হয় তখন বুঝতে হবে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এখন খর্বিত হচ্ছে। তবে বাংলাদেশে বিগত সময়ের চেয়ে এখন গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ক্ষেত্রে পার্থক্য সূচিত হওয়ার লক্ষণ দেখা গেছে।
তিনি বলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতার যে সূচক, বাংলাদেশ এখনো সেই সূচকে অনেক নিচে অবস্থান করছে। গণমাধ্যমকে বাধাগ্রস্ত করার প্রধান শক্তি রাজনৈতিক দলগুলো। তিনি আরও হলেন, ছাত্র জনতার অভ্যুত্থানে অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হলেও বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যে অসম চুক্তি রয়েছে, তা এখনও রিভিউ করার কোনো উদ্যোগ দেখিনি।
নুরুল কবির বলেন, আমরা দেখছি যারা আন্দোলন করেছে তারা ১৬ ডিসেম্বর মানে না, এর দায় কাদের। নারী সংস্কার কমিশন মানে না, এর দায় কাদের? একদিকে যেমন আশাবাদী হয়ে উঠছি আবার আশঙ্কা দেখছি। যে কোনো সংস্কারের বটম লাইন হবে স্বাধীনতা, ’৭১ -কে ধরেই সব ধরনের সংস্কার হতে হবে।
গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার জন্যে আমরা আমাদের দলের পক্ষ থেকে লড়াই চালিয়ে যাব। তবে স্বাধীনতার সীমা নির্ধারণ করা উচিত। প্রত্যেকের জবাবদিহিতা দরকার। গণমাধ্যম কতিপয় গোষ্ঠীর মালিকানার মাধ্যমে তাদের সেবা করার চর্চায় পরিণত হয়েছে।
তিনি বলেন, গণমাধ্যমের মালিকানার ক্ষেত্রে নীতিমালা দরকার, যেন একচেটিয়া মালিকানা না গড়ে ওঠে। এমন কোনো নীতিমালা থাকা যাবেনা যা গণমাধ্যমের গলা টিপে ধরে। ভয়হীন সমাজ তৈরি করতে চাই। রাষ্ট্র এমন কোনো আইন করতে পারবেনা যা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করে। সাংবাদিকদের এথিক্যাল জার্নালিজমের জন্যে নীতিমালা থাকা উচিত। মব আক্রমণ চলছে। ভয়ের চোটে চাকরি চলে যাচ্ছে। রাষ্ট্র যদি মব আন্দোলন বন্ধ করতে না পারে তাহলে রাষ্ট্রের অস্তিত্বই থাকে না।