অন্যায়ের জয় চিরস্থায়ী নয় ! - BANGLANEWSUS.COM
  • নিউইয়র্ক, ভোর ৫:১৯, ৫ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ


 

অন্যায়ের জয় চিরস্থায়ী নয় !

banglanewsus.com
প্রকাশিত ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৪
অন্যায়ের জয় চিরস্থায়ী নয় !

রাজু আহমেদ :: আপনার অনেক কিছুই করার নাই কিন্তু যে সহকর্মী ঘুষ দিয়ে চাকুরি পেয়ে আপনার পাশের ডেস্কে বসে, বড় বড় নীতিকথা বলে, আজানের আগেই মসজিদে গিয়ে বসে থাকে তাকে অন্তত কথা ও আচরণে বুঝিয়ে দেন, আপনি আর সে এক নন। সম-বেতনে কিংবা সমপদে চাকুরি করেও আপনি বড়! আপনার কথায়, ওয়াজে কিছুই বদলাবে না কিন্তু যে স্বজন সন্তানের চাকুরির জন্য ঘুষের টাকা গুছিয়ে রেখেছে, আপনার যে প্রতিবেশি চাকুরি দেয়ার কথা বলে টাকা নেয় তাকে ভাবসাবে বোঝান, আপনার জোরটা আপনার মস্তিষ্কে। আপনার মেরুদন্ডের শক্তি আপনার সততায়।
আপনার বেতনের চেয়ে আয়ের খোঁজ-খবর রাখায় যে প্রতিবেশীর বেশি ঝোঁক তাকে দূরের লোক বানান। যারা আপনাকে লোভ দেখায়, অন্যায়ভাবে চাপ দেয়, ভয়-ভীতি দেখিয়ে স্বার্থ উদ্ধার করতে চায়,,তাদের দিকে তাকিয়ে জোরেশোরে হাসি দিন! চোখে চোখ রেখে না বলতে শিখুন। মনে রাখবেন, অন্যায়ের পক্ষের লোক যত শক্তিশালী হোক তারা মানসিকতায় দুর্বল। ঘুষের বিপুল অর্থ, দুর্নীতির অনেক বিত্ত আপনার হালাল রুজির চেয়ে বেশি বারাকাহ বহন করে না। হালাল আয়ে আপনার সন্তান বিপথে যাবে না, রোগ-শোকে আপনায় বিপর্যস্ত করবে না। ছোট্ট ছোট্ট পরীক্ষার সময়েও স্রষ্টার ওপর বিশ্বাস রাখুন। তিনি আপনাকে সম্মানিত করবেন। বড় করবেন। বিপদ থেকে উৎরে দিবেন।
যে সহকর্মী ঘুষ খায়, অন্যায়-অবৈধভাবে অনেক কাজ করে তার জোর সবজায়গায় আপনার থেকে বেশি কিন্তু আপনি তো তার সাথে দূরত্ব রাখতে পারেন। নষ্টের দলে মিশে গেলে আপনার সাথে থাকা ফেরেশতাদের কষ্ট হয়! একটু আলাদা হয়ে চলুন না! ন্যায়ের পক্ষে কিছু কথা বলুন না! সততা আপনার শক্তি। মেধার যোগ্যতায় চাকুরি পেয়ে যদি সুপারিশে যিনি কাজ পেয়েছে তার কাছে নত হয়ে যান তবে আপনি অযোগ্য হলেই মঙ্গলের ছিল। জেনেশুনে নষ্টদের দলে ভীরে গেলে আপনার যোগ্যতার আর কোন মূল্য নাই।
চোখ বুঝে অনেক কিছু দেখতে হয়, সহ্য করতে হয় এবং জেনেশুনেও বহুক্ষেত্রে চুপ থাকতে হয়। তবে আপনার গন্ডিতে সততা-অসততা মিশ্রণ করবেন না। প্রত্যেকেই জিজ্ঞাসিত হবে। যার কৈফিয়ত তাকেই দিতে হবে। রাস্ট্রের কাছে বেইমান পরিচয়ে বেঁচে থাকা চরম লজ্জার। রাষ্ট্রের ঋণ আপনাকে মেটাতেই হবে। যারা লম্বা লম্বা নীতির বচন দিয়ে দু’টাকার জন্য টেবিলের নিচ থেকে হাতবাড়িয়ে দেয় তাদের মান ধুলায় মিশুক। যতদিন দায়িত্বে থাকবেন রাষ্ট্রের অর্থের এক পয়সাও এদিক-সেদিক করলে দেহে আবর্জা ঢুকবে। রক্ত দূষিত হবে। পেট দূষিত হলো মস্তিষ্ক পঁচে যায়!
জীবনে অশুদ্ধ মানুষের থেকে কিছুই শিখবেন না। শুধু শিখবেন, সে যা করে আপনি সেটা করা থেকে বিরত থাকা। একজন দুর্নীতিবাজ মানুষের অনুসরণ করা থেকে নিজেকে অজ্ঞ রাখা অনেক বেশি সম্মানের। আশেপাশেই অনেক স্বজন ও সুজন পাবেন যারা অন্যায়কে ন্যায় মনে করে, অবৈধকে বৈধতা দিতে চায়। স্বার্থের জন্য সবকিছু করতে পারে। তাদেরকে এড়িয়ে চলুন। তাদের সাথে কম কথা বলুন। অন্তত আচরণে একটুকু বোঝান যে, আপনি তাদের মত নন। তাদেরকে ঘৃণা করতে পারাটাও বাড়তি যোগ্যতা। অন্যায়ের কাছে একবার মাথা নত করে দিলেই চিরদিনের জন্য চেপে ধরবে।
সমাজে অন্যায়ে কণ্ঠস্বর উঁচু, ক্ষমতার হাত লম্বা। হ্যান-তান করে ফেলার হুমকি দিতেই পারে! বস্তুত সততা-ন্যায়পরয়ণতা কিছুটা চাপেই আছে। সমাজের এমন অসুস্থতা চিরদিন থাকবে না। সব পঁচে যাক তবুও আপনার বিবেক, আপনার চিন্তা থেকে যেনো গন্ধ না বেরোয়। অসুস্থ চিন্তা, সীমাহীন লোভ যেনো আপনায় সংক্রমিত না করে। একটু একটু করে নিজেকে আলাদা করুন। ন্যায়বিচারকের সামনে একদিন দাঁড়াতেই হবে। সেদিন যেনো হারাম রুজি, অনৈতিক পুঁজি আপনার সব অর্জনকে বাতিল করে না দেয়। সৎপথে একলা চলুন। তবুও নষ্টদের সাথে মিশবেন না। ওদের কাছে ঘেঁষবেন না। ওদের সাথে হাসবেনও না। আপনাকে অহংকারী বলুক। তবুও সত্য ও সততার প্রশ্নে অবিচল থাকুন। কেবল নীতিপথ, আইনের রীতিপথ, ধর্মের সোজাপথ আপনাকে আদর্শ মানুষ হিসেবে গড়তে পারে। (লেখক: রাজু আহমেদ, কলাম লেখক)

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন।